এম লুৎফর রহমান : অকাল মৃত্যুর হাত থেকে মানবকুলকে বাঁচাবার জন্যে বিষমুক্ত সব্জি উৎপাদনে নরসিংদী জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের সাবিকুন্নাহার শিউলি।
বিষমুক্ত জৈব সার কেঁচো কম্পোস উদ্ভাবনে ২০১২ সালে এই নারী কৃষানী পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ পদক বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার। সরেজমিনে জানা যায়, জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুকছেদ আলী ও রায়পুরা উপজেলা কৃষি অফিসের বিশেষ সহযোগীতায় জৈব সার কেঁচো কম্পোস তৈরীতে উৎসাহিত হন কৃষাণী শিউলি। এ জৈব সার নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা পাশ্ববর্তী বেলাব ও শিবপুর উপজেলার প্রায় আড়াইশ বিঘা জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীরা। তিনি নিজেও জৈব সার কেঁচো কম্পোস ব্যবহার করে ৫ বিঘা জমিতে শিম, আড়াই বিঘা জমিতে আলু ও ৪ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
এ সার ব্যবহারের ফলে জমিতে কোন রকম রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না। বাড়তি কীটনাশকের প্রয়োজনও হয় না। যার ফলে জমিতে অধিক ফলন ভাল হয়। তার এ সাফল্য দেখে এলাকার শত শত কৃষক ঝুঁকে পড়েছেন একই কৌশলে ফসলি জমিতে এ জৈব সার কেঁচো কম্পোস ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন উৎসাহিত হন। বিষমুক্ত সব্জি উৎপাদনে কৃষাণী শিউলির এ অবদান দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে তিনি সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতা কামনা করেছেন কৃষাণী শিউলি। আদিয়াবাদ ইউনিয়নের কৃষক হারেজ মিয়া জানান, জমিতে জৈব সার কেঁচো কম্পোস ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মান সম্মত ফসল উৎপাদন হয়।
একই সাথে জমিতে এ জৈব সার ব্যবহারের ফলে জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না এবং বাড়তি কীট নাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন বোধ হয় না। এতে ফলন যেমন ভাল হয় অধিক টাকা হাতাতে পারে মনে হয়। এদিকে বাজারে রাসায়নিক সার ব্যতীত বিষমুক্ত সবজির চাহিদা ক্রেতা সাধারনের মধ্যে লক্ষনীয়। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্র্তা গোলাম রসুল বলেন, জৈব সার কেঁেচা কম্পোস ব্যবহারের ফলে জমির পানি ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমির উর্ববরতা বৃদ্ধি হয়। এ সারের ব্যবহারের ফলে জমিতে রাসায়নিক সার তেমন ব্যবহার করতে হয়না বলে বাড়তি কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। তাতে ফলনও হয় ভাল।