মো: ফরিদুজ্জামান : ১৪ দলের অনড় অবস্থান, ১৮ দলের দফায় দফায় হারতাল আর অবরোধে বিপন্ন শেরপুরের জনজীবন। সন্ধ্যে হলেই চায়ের দোকানের স্যাটেলাইট টিভির পর্দার সামনে ভোটারদের ভিড়। ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিচ্ছে একটি সুন্দর সুখময় নতুন সূর্যের আলোর অপেক্ষায়। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে আলোর বদৌলতে দেখা দিচ্ছে ঘোর অন্ধকার। শেরপুরের সর্ব শ্রেনীর মানুষের যত ভাবনা নির্বাচন কে ঘিরে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সাধারণ জনমনে ততই বাড়ছে আতংকের সীমারেখা। কোথায় গিয়ে দাড়াবে আতংকের ওই সীমারেখা তাও তারা জানেন না। প্রধান দুই জোটের প্রতিসিংসার কবলে গোটা দেশের ন্যায় গোটা শেরপুরবাসীও। শেষ পর্যন্ত কি প্রধান বিরোধী দল ছাড়াই নির্বাচন হচ্ছে? নির্বাচন হলে দেশে বিদেশে কি এর গ্রহন যোগ্যতা পাবে? নাকি তৃতীয় কোন শক্তির হাতে ক্ষমতা চলে যাচ্ছে? নাকি গোটা দেশ গৃহযুদ্ধে পরিনত হচ্ছে? এসব নানা প্রশ্নের জবাব যখন সাধারণ ভোটাররা খুজে বেড়াচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে তখন প্রার্থীরা ভোট চাইতে গেলে নির্বাক হয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তাদের আর কিছুই করার থাকে না। শেরপুরের ৩টি আসনে আওয়ামীলীগের প্রতিদ্ব›দ্বী হিসাবে জাতীয় পাটি, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে থাকলেও সাধারণ ভোটারদের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। তাদের ভাবনা গোটা বাংলাদেশ কে নিয়ে। তাদের ওই সব নানা প্রশ্ন আর ভাবনা গুলোকে শেয়ার করতে বেরিয়েছিলাম আমি । অনেক ভোটাররাই জানান, আর কোন রক্তপাত নয়, আর কোন সহিংস রাজনীতি নয়, রক্তপাত আর সহিংস রাজনীতি থেকে আমরা শেরপুরবাসী এর উত্তরন চাই। যদিও বিরোধীদলের অবরোধ আর হরতালে শেরপুরে দুই একটি ছোট ঘটনা ছাড়া বড় কোন সহিংস ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ভোট বিরোধী ভোটার বেশি থাকায় ৫ জানুয়ারীর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে কোন মূলে পন্ড করে দেওয়ার আশংকা করছেন। অন্য দিকে প্রার্থীরা ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সব ধরনের নিরাপত্তা ও সহযোগীতার আশ্বাস দিলেও কোন সাড়া মিলছে না। তারা দাবী করছেন- অতিতে প্রথমে এরশাদ পরে খালেদা জিয়ার এক দলীয় নির্বাচন এদেশের মানুষ মেনে নেয়নি এ এবারও মেনে নেবে না। অতএব দেশ ও দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের বিকল্প হিসাবে আর তারা কিছুই ভাবছেন না। এদিকে প্রার্থীরা দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে বিরামহীন ভাবে এলাকায় নির্বাচনী মিটিং, মিছিল ও গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। মিটিং মিছিলে ভোটারদের উপস্থিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের কৌশল চালিয়েও প্রার্থীরা ব্যর্থ হয়েছেন। মিটিং মিছিলে ভোটারদের উপস্থিতি নিতান্তই নগন্য হওয়ার আশংকায় প্রার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। শেষ পর্যন্ত সাধারণ ভোটার নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোট দিতে আসবে কি? এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছে স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের। তবে সরেজমিন ঘুরে সর্বশেষ এটাই প্রতিয়মান হয়েছে যে, মোট ভোটারের ৫০ ভাগ ভোটার ভোট প্রদান করলে শেরপুরের ৩টি আসনেই সরকারী দলের প্রার্থীদের সাথে লড়াই হবে।