: ২০১৩ সালে দুই ডজন আলোচিত হত্যাকাণ্ডসহ ১০৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে যশোরে। এর মধ্যে দুই ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর যুবলীগ নেতা, ছাত্রলীগের সভাপতি, ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি, শিশু ও স্কুল ছাত্র রয়েছে।
তবে, এসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, সনাক্তকরণসহ অধিকাংশ আসামিই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) রেশমা শারমিন।
সূত্র মতে, আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিলুর রহমান মিন্টু। ৯ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই দিনে দুপুরে তাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
২৪ মার্চ বেনাপোলের শিবনাথপুর বারোপোতায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন আওয়ামী লীগ নেতা পুটখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। ছেলের সামনে পড়ন্ত বিকেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
২৭ অক্টোবর হরতালে বিএনপির জামায়াত ক্যাডাররা কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে অভয়নগর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন শিমুলকে।
২৯ অক্টোবর শহরের আরএনরোডে সন্ত্রাসীদের হাতে গুলিবিদ্ধ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
২০ নভেম্বর ঝিকরগাছার লাউজানী এলাকায় দুর্বৃত্তরা মুক্তিপণের দাবিতে মিরাজ নামে এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করে।
২৭ নভেম্বর উপশহর এলাকায় নিজ বাড়িতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন ইউনিয়ন জামায়াত সেক্রেটারি আব্দুল হাই সিদ্দিকী বুলবুল।
৯ ডিসেম্বর শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কবির হোসেন পলাশ।
২১ ডিসেম্বর শহরের বেজপাড়ায় সতীনের হাতে খুন হন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর জবেদা খানম।
২৫ ডিসেম্বর জেলা কৃষকলীগের সহসভাপতি মনিরামপুরের বাসিন্দা শফি কামলাকে বিএনপি জামায়াত ক্যাডাররা কুপিয়ে হত্যা করে। একইদিন ঝিকরগাছার গদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করায় দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন।
এছাড়া আরো কয়েকটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এর মধ্যে ২৯ জানুয়ারি বসুন্দিয়া এলাকায় পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা চালক শহিদুল ইসলাম ও হেলপার সোহনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ট্রাকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখে।
৪ জানুয়ারি শহরের এমএম আলী রোডে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন মোটর পার্টস ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন। এ মাসেই পুলিশ কনস্টেবল জহুরুল হকের মৃত্যু ছিল আরো একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা।
৩১ জানুয়ারি মনিরামপুরে জামায়াত-শিবিরের সাথে সংঘর্ষের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
১০ ফেব্রুয়ারি বসুন্দিয়ায় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের কারণে খুন হন কামরুল ইসলাম।
১৫ ফেব্র“য়ারি অভয়নগরের শংকরপাশায় বোমা হামলায় খুন হন হ্যান্ডলিং শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন। একইদিন ঝিকরগাছার দিকদানায় খুন হন মোটরসাইকেল চালক রফিকুল ইসলাম।
২৪ ফেব্র“য়ারি সদরের ইছাপুরে পুত্রবধূর সভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন বৃদ্ধা লিলি বেগম।
২৩ ফেব্র“য়ারি চুড়ামনকাটির সাবেক মেম্বার আলতাফ হোসেন দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন।
৭ মার্চ সদর উপজেলার শুড়ো গ্রামে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন শরবিন্দ মজুমদার নামে এক কৃষক।
৯ মার্চ শহরের বকচর এলাকায় মুক্তিপণের দাবিতে শিশুপুত্র সানিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে প্রতিবেশি এক মহিলা।
১০ মার্চ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী গুলিতে নিহত হন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফিরোজের ছেলে আবু শাহরিয়ার অর্ণব।
১২ মার্চ শহরের ষষ্ঠীতলায় যৌতুকের দাবিতে রানী দে নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
২৩ মার্চ একই মনিরামপুরের জয়পুর গ্রামে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইট ভাটা শ্রমিক আনিসুর রহমান। ১১ এপ্রিল সদরের ভায়না ধানঘাটা গ্রামে ডাকাতের হাতে খুন হন স্বপন হোসেন নামে এক ব্যক্তি।
১৫ এপ্রিল অভয়নগরে রুবেল ওরফে পটল নামে এক যুবককে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে।
২১ এপ্রিল চৌগাছার কাদবিলায় জমা সংক্রান্ত বিরোধে খুন হন মোমিন ও রহিম নামে দুইজন।
২৬ এপ্রিল সদর উপজেলার সাহাপুরে ছেলের হাতে খুন হন আইয়ুব হোসেন নামে এক ব্যক্তি।
২৯ এপ্রিল যশোর শহরের টালিখোলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন যুবলীগ কর্মী সরোয়ার হোসেন টুলু।
৩ মে অভয়নগরের একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদউদ্দিনের ৪ খণ্ড লাশ উদ্ধার করা হয়।
২১ মে যশোর শহরের নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়ায় গৃহবধূ লাবনী খাতুনকে তার স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
২০ মে পুলিশের কথিত সোর্স ক্লিক শামিম চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড় এলাকায় খুন হন।
৩১ মে ঝিকরগাছার নায়ড়ায় অন্তঃসত্তা গৃহবধূ হালিমা খাতুন হত্যার শিকার হন।
২৮ জুলাই সদরের পতেঙ্গালী গ্রামে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয় ইজিবাইক চালক হাফিজুর।
২৯ জুলাই অভয়নগরের পাইকপাড়া বিলে খুন হন হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি।
১৮ আগস্ট ঝিকরগাছার মধুখালীতে ভাইয়ের হাতে খুন হন জাকির হোসেন।
২০ আগস্ট উপশহরে স্বামীর হাতে খুন হন বকুল খাতুন।
৪ সেপ্টেম্বর চৌগাছার বুন্দলিতলায় বিএনপির সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন নারায়নপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম।
২৩ সেপ্টেম্বর একই উপজেলার জগন্নাথপুরে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন যুবদল কর্মী আতিয়ার রহমান।
৩ অক্টোবর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকায় খুন হন আনোয়ারা বেগম নামে এক মহিলা।
৩ নভেম্বর বেনাপোলে রুবেল নামে এক কিশোর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
৯ নভেম্বর সদরের পাগলাদাহে আক্তার আলী চুন্নু সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন।
১৪ নভেম্বর সিকিরহাট খেয়াঘাটে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম বিশ্বাস।
২১ নভেম্বর মনিরামপুরের চিনোটোলায় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন যুবদল নেতা আশিকুর রহমান।
এসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ খুনিদের গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।। ইয়ানুর রহমান, যশোর ।