ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ- ঝালকাঠির গাভারামচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম খান লিটন ওরফে লিটু খা’র বিরুদ্ধে আনিত অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে তদন্ত শেষে ৬ জানুয়ারি বিশেষ সভা আহবান করা হয়েছে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরেজমিন তদন্ত শেষে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম এ বিশেষ সভা আহŸান করেন বলে জানাগেছে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ ২১টি অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ১ অক্টোবর অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন ১০ ইউপি সদস্য। সমাজসেবা কর্মকর্তার আহুত বিশেষ সভার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ধারা ৩৯ (৩) নং উপধারা অনুযায়ী গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ১০ সদস্যের অনাস্থা প্রস্তাবে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য ২০ অক্টোবর চেয়ারম্যানকে নোটিস প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু তার জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় ১৭ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনাস্থা প্রস্তাবে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী আগামী ৬ জানুয়ারি সকাল ১০ টায় গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে আয়োজিত বিশেষ সভায় চেয়ারম্যান, সচিব ও ১০ ইউপি সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, ২০১১-১২ অর্থ বছরের বনায়নের গাছ বিক্রির টাকা, কাবিখার ৬ মে.টন গম এবং এলজিএসপি প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ, ২০১২-১৩ অর্থ বছরে মহাসেন ঘূর্ণিঝড় প্রকল্পের ৭শ কেজি চাল ও নগদ টাকা ভুয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে আত্মসাৎ, পাম্প হাউজের ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া ট্যাক্স বাবদ প্রায় ৪ লাখ টাকা চেয়ারম্যানের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে রেখে ব্যক্তিগত কাজে খরচ, ভিজিডি খাদ্য শস্য বিতরণে দুর্নীতি, মৃত সনদের বিনিময়ে অর্থ আদায়, ইউপি ভবনে কৃষি ব্যাংক ও এনজিওর আদায়কৃত ভাড়ার টাকা পরিষদের তহবিলে জমা না করে নিজের কাজে খরচ করেন। অনাস্থা প্রস্তাবে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সনে ইউপি পুকুরের অর্ধ লক্ষাধিক টাকার মাছ চুরি, সালিশির নামে টাকার বিনিময়ে রায় প্রদান, তার সমর্থিত পেশাদার অপরাধী বাহিনীর চুরি-ডাকাতি সহ মাদক ব্যবসা, নির্বাচনে তার বিরোধিতা করায় সনদপত্র প্রদানে হয়রানি, সরকারি বিধিমালা ভঙ্গ করে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন, দু’বছরে ৭ ইউপি সচিবের বদলি, বেরমহল বাজার ও ইউপি মসজিদ সহ বিভিন্ন মাদ্রাসার কাজ না করে বরাদ্দ টিআর আত্মসাতের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে কয়েকজন ইউপি সদস্য জানায়, প্রথম বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই আ’লীগ নেতা লিটু খাঁ ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের ল্যাপটপ সহ মালামাল নিজেই চুরি করে একটি চুরি মামলার করেন। পরবর্তীতে পুলিশের অভিযানে তার আপন বোনের বাসায় রক্ষিত উক্ত চোরাই মালামাল উদ্ধার করলে তাকে সহ চেয়ারম্যান লিটু খাঁকে উক্ত মামলার আসামি করলে জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এছাড়াও বানারিপাড়ার কবির হাওলাদারের বাড়ি থেকে একটি বিদেশি গরু চুরি করা মামলা আসামি ও চার্জশীটভূক্ত সহ পুলিশি অভিযানে তার বাড়ি থেকে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার সহ বহু ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে চেয়ারম্যান লিটু খাঁ চরম বিতর্কিত হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম খান লিটন ওরফে লিটু খা’র তার বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা উল্লেখ করে বলেন, আমার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রয়াত এক প্রার্থীর ভাই অধিকাংশ ইউপি সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছে এবং এ অনাস্থা প্রস্তাব প্রদানের ষড়যন্ত্র করেছে।