হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ চাকুরি জাতীয় করণ ঘোষনার এক বছর পরও কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের ৫২ রেজিস্ট্রার্ড প্রাইমারী স্কুল ও ৪ কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২২৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেত জীবন যাপন করছেন। তাই ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়,গত বছরের ০৯ জানুয়ারী ঢাকায় অনুষ্টিত বিশাল শিক্ষক সমাবেশে প্রধান মন্ত্রী মেখ হাসিনা সারা দেশের ২২হাজার ৯২৫টিরেজিস্ট্রার্ড বেসরকারী প্রাইমারী স্কুল ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৪ হাজার ৬২৫জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকুরি একযুগে সরকারী করণের ঘোষণা দেন কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যবধি শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোন সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাননি।ঘোষণার দীর্ঘদিন পর ঈদুল আযহার আগে আগষ্ট-২০১৩ পর্যন্ত বেতন-ভাতা পেলেও গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।কবে নাগাদ পাওয়া যাবে তারও কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছেনা।এমতাবস্থায় বেতন-ভাতা না পেয়ে বেশির ভাগ শিক্ষকরা চড়া সুদে অগ্রিম চেক বিক্রি করে দিয়ে কষ্টে-পৃষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এতে তারা দিন-দিন মহাজনের চক্রবৃদ্ধি ঋনের জালে জড়িয়ে মোটা অংকের ক্ষতির মূখে পড়েছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, হোসেনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫২টি রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪ টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়(বর্তমানে সরকারী) রয়েছে। এ সব বিদ্যালয়ে ২২৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। সরকারী ঘোষণার আগে তারা তৎকালিন নীতিমালা অনুযায়ী নিয়মিত বেতন ভাতাদি পেয়েছিলেন।কিন্তু প্রধান মন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন কল্পে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি উপজেলা যাচাই-বাচাই কমিটি গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন ওই কমিটির লোকজন সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিটি বিদ্যালয়ের নামের তালিকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জেলা কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেন। কিন্তু সরকারী করণের প্রজ্ঞাপণ জারি হলেও অফিসিয়াল আনুসাঙ্গিক বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পন্ন না হওয়ার কারনে সারা দেশের ন্যায় হোসেনপুর উপজেলার ২২৪ জন শিক্ষক চার মাস ধরে বেতন-ভাতাদি পাচ্ছেনা। ফলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান,গত চার মাস ধরে বেতন-ভাতাদি না পেয়ে তারা বেতনের চেক,স্বর্ণালংকার ও জমি বন্ধক দিয়ে নিদারুন কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
উপজেলা রেজিঃ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আলাল উদ্দিন জানান, সরকারী করণের গেজেট প্রকাশ হলেও কিছু দাপ্তরিক কাজ বাকি থাকার অজুহাতে শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।তাই তিনি দ্রæত সময়ের মধ্যে বেতন-ভাতাদি পরিশোধের জন্য যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ কে এম বাছেদ জানান, সরকারী করণের নীতিমালা চুড়ান্ত না হওয়ায় প্রাথমিক ও গন শিক্ষা মন্ত্রনালয় সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে বিধায় গত ৪ মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেনা। তবে দ্রæত সময়ের মধ্যে তারা এসব বকেয়া বেতন পাবেন বলে আশা করছেন।