শ্যামলবাংলা ডেস্ক : একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য ও শুনানি শুরুর জন্য ২৮ জানুয়ারি দিন রাখেন। প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে ওইদিন এ মামলার শুনানি শুরু হবে।
জামায়াত নেতা সুবহানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরন, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগসহ নয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
পাবনার সুজানগর থানার মানিকহাটি ইউনিয়নের তৈলকুণ্ডি গ্রামে ১৯৩৬ সালে জন্ম সুবহানের। তিনি পাকিস্তান আমলে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ছিলেন । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর তিনি পাবনা জেলা শান্তি কমিটির সেক্রেটারি এবং পরে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে ইয়াহিয়া সরকারের পতন দেখে গোলাম আযমের সঙ্গে তিনিও পাকিস্তানে চলে যান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি দেশে ফেরেন এবং পরে সংসদ সদস্য হন। তার নেতৃত্বে পাবনা জেলার বিভিন্ন থানায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও মুজাহিদ বাহিনী গঠিত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হলে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে সুবহান পাবনায় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট শুরু করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে যুক্তি দেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।
সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ১৮ ডিসেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে সুবহানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি কোথায় কখন কোন অপরাধ করেছেন তাও প্রসিকিউশন নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশন জামায়াতের এই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ১৯ অক্টোবর অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা থেকে সুবহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়