আদি নেতারা ছাড়, পাতি নেতারা গ্রেফতার!
এস.গুলবাগী,বগুড়াঃ যৌথ অভিযানে বড় নেতারা ছাড়া পেলেও গ্রেফতার হয়েছে ১৮ দলের ছোট খাট অর্ধশতাধিক নেতা। ১৮ দলীয় জোটের ৮৩ ঘন্টা অবরোধের ২য় দিনে বগুড়ার শাজাহানপুরে ১৮দলীয় জোটের্র সমাবেশে ষাড়াশী অভিযান চালিয়ে বেধড়ক লাঠি পেটা সহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। এসময় বিপুল সংখ্যার র্যাব-পুলিশ আমর্ড পুলিশ সহ গোয়ন্দা পুলিশ(ডিবি) সমাবেশ ঘেরাও করে বেপরোয়া লাঠিচার্জ ভংচুর চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের কমপক্ষে ৬৪জন নেতাকর্মিকে গ্রেফতার করেছে বিজিবি, র্যাব-পুলিশের যৌথ বাহিনী। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ১৮ দল।
রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বটতলা থেকে ১৮ দলীয় জোটের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মহাসড়ক প্রদক্ষিন শেষে পুনরায় বটতলায় সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে বসে পড়েন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলূল হক রতনের বক্তব্য দেয়ার সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম, র্যাব-১২ বগুড়া বিশেষ কোম্পানীর অধিনায়ক মেজর মোছাদ্দেক ইবনে মজিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সায়েম, সিনিয়র সহকারী এএসপি (এ সার্কেল) নাজির আহম্মেদ .র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানীর সিনিয়র এএসপি আবু সাঈদ, ডিবি’র ওসি মিজানুর রহমান ও শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল আলম,ওসি (তদন্ত) হাসানের নেতৃত্বে আইনশৃংখলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য যৌথ ভাবে ১৮দলীয় জোটের সমাবেশের ওপর অতর্কিতভাবে এ্যাকশন চালায় । এসময় তাদের বেপরোয়া লাঠিচার্জে বেসামাল হয়ে পড়ে সমাবেশে থাকা নেতা কর্মী সমর্থকরা । র্যাব পুলিশের এ্যকশনে জোটের নেতা-কর্মি ,পথচারী, দোকানী দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করলে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা বেপরোয়া ভাবে লাঠি পেটা করে তাদের গণগ্রেফতার করে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একপর্যায়ে সমাবেশের চেয়ার ও মাঝিড়া বন্দরের চা, পান-সিগারেট ও বিভিন্ন দোকানপাট ব্যাপক ভাংচুর চালালে সেখানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। হামলায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলুল হক রতন ও সিনিয়র য্গ্মু আহবায়ক আবুল বাশার,যুগ্ম আহবায়ক আজিজুর রহমান বিদ্যুৎসহ ১৮ দলীয় জোটের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়।
এ সময় উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল লতিফ প্রামানিক, আব্দুস সালাম চেয়ারম্যান, বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম দুদু, ডা. আব্দুস সোবহান, আব্দুল হাকিম, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের আহবায়ক আরিফ সরকার টিয়া, জামায়াত নেতা জহুরুল, আব্দুল হাই, রুহুল আমিন, ইউনুছ বিএনপি নেতা ফরহাদ, রফিক, যুবদল নেতা নুর মাহমুদ, মতিন, সাজু, ছাত্রদল নেতা মাসুদ সহ বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও অঙ্গসংগঠনের ৬৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানান, ক্যান্টনমেন্টের এলাকা হওয়ায় এখানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। তাছাড়া একের পর এক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ সহ সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে বেশ কয়েকটি গাড়ীতে করে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মিদের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বগুড়া ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয়। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর পাওয়া যায়নি। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম বলেছেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মহাসড়কে নাশকতা, গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, সমাবেশস্থল ঘেরাও করে র্যাব-পুলিশের তান্ডব ও নেতাকর্মিদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ সোমবার বগুড়া জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ১৮ দল। গতকাল বিকেলে শহরের বনানীতে ১৮ দলের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জোটের আহবায়ক ভিপি সাইফুল ইসলাম এ ঘোষনা দেন। সমাবেশে ১৮ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এক বিবৃতিতে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও সেক্রেটারি অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, বগুড়া শহর শিবিরের সভাপতি আলাউদ্দিন সোহেল, সেক্রেটারি রেজাউল করিম অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।