সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি : সাপাহারে ভোটার আইডি কার্ডে তোলা ছবিতে মাথায় কাপড় না দেয়ায় স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করার বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সমাধান না হওয়ায় অবশেষে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা যায়, বেশ কিছু দিন পূর্বে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য সরকারী ভাবে ঘোষনা দেয়া হলে উপজেলার গোডাউন পাড়ার মোঃ আশাদুল হক এর পুত্র মোঃ আনারুল হক এর ২ সন্তানের জননী মোসাঃ রেশমা আক্তার ইউপি কর্যালয়ে এসে ভোটার হওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করে সেখানে ছবি তোলে। ভূল বশতঃ ছবিতে মাথায় কাপড় না থাকায় বর্বর স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরীক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে ঘরে আটকিয়ে রাখে। সম্প্রতি সুযোগ বুঝে সে সেখান থেকে পালিয়ে বাবার বাড়ী এসে বিষয়টি নিয়ে সদর ইউপি কার্যালয়ে এক অভিযোগ দাখিল করে। বুধবার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উভয় পক্ষকে ডেকে পাঠালে বর্বর আনারুল ও তার কোন লোকজন সেখানে উপস্থিত না হওয়ায় বিষয়টি অমিমাংসিত থেকে যায়। অবশেষে উপায় অন্ত না পেয়ে অসহায় রেশমা রাতে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে ঘটনার ভিকটিম রেশমার সাথে কথা হলে তিনি জানান যে, বিয়ের পর হতেই তার স্বামী যৌতুকের জন্য তাকে নানা ভাবে নির্যাতন করে আসত। সম্প্রতি তার নির্যাতনের মাত্রা একটু বেড়ে গেলেও সন্তানের কথা চিন্তা করে রেশমা কষ্ট করে স্বামীর সংসারে থাকতো। বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ডে মাথায় কাপড় না দিয়ে ছবি তোলার বিষয়টিকে অবলম্বন করে তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ৬ডিসেম্বর রাতে আনারুল পুনরায় যৌতুকের এক লক্ষ টাকা দাবি করে। আমার দরিদ্র পিতার পক্ষে এতো টাকা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালে সে আমার প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং মানুষকে যেন খালি মাথা দেখাতে না পারি বলে তার শাশুড়ী কহিনুর ও ননদ রাবেয়া তাকে চেপে ধরে এবং তার স্বামী ব্লেড দিয়ে তার মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে ঘরে আটকে রাখে। কৌশলে সে সেখান থেকে বেরিয়ে এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় গত বুধবার রাতে তিনি এর সুষ্ঠ বিচার চেয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইনে মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে বাড়ীর সকলেই পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।