শ্যামলবাংলা স্পোর্টস : ৫ ম্যাচের ঐতিহ্যবাহী এ্যাশেজ সিরিজের ২ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। ৩ টেস্টের ৬ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৬ ব্যাটসম্যান করেছেন ৭টি সেঞ্চুরি। অথচ ইংলিশদের কারো নামের পাশেই ছিল না ৩ অঙ্কের কোনো স্কোর! কাল পার্থ টেস্টের শেষ দিনে তরুণ বেন স্টোকসের ব্যাটে প্রথমবারের মতো দেখা গেছে সেই প্রতিরোধ; কিন্তু সেটাও বাঁচাতে পারেনি অ্যালিস্টার কুকের দলকে। স্টোকসের সেঞ্চুরিতে সিরিজে নিজেদের সর্বোচ্চ ইনিংস গড়েও হেরে গেছে ইংল্যান্ড। তাদের ৩৫৩ রানে অলআউট করে দিয়ে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়া!
অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ জিতেছিল ২০০৯ সালে। এর পর থেকে টানা ৩টি সিরিজে হারে তারা। খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ানরা ভুলতেই বসেছিল অ্যাশেজ জয় কাকে বলে? পার্থে কাল জয়োৎসব করা দলটির অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ছাড়া আর কারোরই তো ছিল না সেই অভিজ্ঞতা! কিন্তু এ সিরিজের শুরু থেকেই যেন দেখা যাচ্ছিল অন্য রকম এক অস্ট্রেলিয়াকে। অদম্য, নির্দয় সেই দলটির কাছে সব দিক থেকেই হার মেনে নিতে হচ্ছে ইংল্যান্ডকে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ানদেরই দিতে হবে কৃতিত্বটা।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৫১ রান নিয়ে খেলতে নামা ইংলিশদের জয়ের জন্য দরকার ছিল আরও ২৫৩ রানের। অসম্ভব সেই লক্ষ্যের চেয়েও বেশি করে ভাবা হচ্ছিল আসলে পুরো দিনটা কোনভাবে কাটিয়ে দেওয়া যায় কি না, সেই সম্ভাবনা নিয়ে। স্টোকস আর ম্যাট প্রায়রের ব্যাটে আভাস ছিল সে রকম কিছুরই। প্রথম এক ঘণ্টা মাটি কামড়ে পড়ে থাকার পর তাদের ৭৬ রানের জুটিটা ভেঙেছেন মিচেল জনসন। লাঞ্চের আগে আর কোনো বিপদ হতে দেননি স্টোকস, আগের টেস্টেই অভিষিক্ত এ তরুণ এই ফাঁকে পূরণ করেছেন সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিটাও। কিন্তু লাঞ্চ থেকে ফেরার পর তৃতীয় ওভারেই তাঁর বিদায়ে শেষ হয়ে যায় ইংলিশদের প্রতিরোধও।
নিজের শততম টেস্টে ব্যক্তিগতভাবে তেমন কিছু করতে পারেননি ক্লার্কও। কিন্তু সতীর্থদের উদ্যমী পারফরম্যান্সে তিনি উপহার পেয়েছেন দারুণ এক স্মৃতি, ‘আমার মনে হয় আমাদের ড্রেসিংরুমে এমন একজনকেও খুঁজে পাবেন না, যে মনে করছে না এটাই তাঁর সেরা সাফল্য। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলা এবং অ্যাশেজ জয়- অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে এটাই সব সময় সেরা সাফল্য।’ সে সাফল্যটাকে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বর্ণনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। এ সিরিজের প্রথম ৩ টেস্টেই তাঁদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এখনই মনে করিয়ে দিচ্ছে পাঁচ টেস্টের সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার সম্ভাবনা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ৩৮৫ (স্মিথ ১১১, ব্রড ৩/১০০) ও ৩৬৯/৫ ডিক্লে. (ওয়ার্নার ১১২, ওয়াটসন ১০৩; ব্রেসনান ২/৫৩)। ইংল্যান্ড : ২৫১ (কুক ৭২; সিডল ৩/৩৬) ও ৩৫৩ (স্টোকস ১২০, বেল ৬০; জনসন ৪/৭৮, লিওন ৩/৭০)।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ১৫০ রানে জয়ী।