সোমবার , ৯ ডিসেম্বর ২০১৩ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

তানোরে লাভজনক ব্যবসা মাছ : কমছে বেকারত্ব

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
ডিসেম্বর ৯, ২০১৩ ৫:০৭ অপরাহ্ণ

Tanore Machs Photo-01 09.12.2013ইমরান হোসাইন :  দেশের অর্থনীতিকে বড় ভূমিকা রাখছে প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস মাছ। এই মাছ লাভজনক হওয়ায় তানোরে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে এর চাষ ও ব্যবসা। বেকারত্ব কমানোসহ এব্যবসায় অর্জিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। পাশাপাশি বাড়ছে মানুষের স্বাবলম্বীতা। তানোরে বর্তমানে প্রায় পাঁচ শতাধিক নতুন করে পুকুর ও জশালয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এঅঞ্চেলের মাছ চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হাট-বাজারগুলো রুই, কাতলা, পাংগাশ, ব্রিগেট ও ছিলভারকাপসহ বোয়াল মাছ, শিং মাছ, টাটি মাছ. টেংরা মাছ ছাড়াও বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ সচারচর পাওয়া যায়। একারণে এঅঞ্চলে কমছে বেকাত্ব ও দারিদ্রতা।
উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মামুনূর রশিদ ২০০৫ সালে বিএ পাশ করে চাকুরীর খোঁজে প্রায় দুই বছর বেকাত্ব জীবন-যাবন করেন। এঅবস্থায় তিনি তার এলাকার রাতৈল গ্রামের শিক্ষিত ব্যক্তি আব্দুল সালাম মাছ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তার কথা ভেবে মামুন ও তার বন্ধু মাসুদ রানা পরামর্শ করে তানোর যুব উন্নয়ন অফিসের মাধ্যমে মৎস্য চাষের ট্রেনিং নিয়ে ২০ হাজার টাকা করে যুব উন্নয়ন অফিস থেকে লোন গ্রহণ করে তারা পৃথক ভাবে দুটি করে পুকুর লীজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। এভাবে দুই বছর পর তারা যুব উন্নয়ন অফিসের লোনের টাকা শোধ করে বর্তমানে মামুন স্বাবলম্বী হয়ে ১৫টি পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। খচর শেষে তার প্রতিমাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে। তার মত মাসুদ রানাও মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তারা বর্তমানে দু’জন মিলে প্রায় ১৫ জন কর্মচারী রেখেছেন। এভাবে মাছ চাষ করে ৭ বছরের মধ্যে তারা আব্দুস সালামের ওই এলাকার সফল মাছ চাষী হিসাবে মানুষের কাছে পরিচিত লাভ করেছেন। মেধা ও আত্মশক্তি এত দূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছে তাদের।
শুধু মামুন ও মাসুদ নয় তাদের মত মাছ চাষ করে প্রায় স্বাবলম্বী হয়েছেন তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বিএ পাশ করা ছাত্র জামিল আহম্মেদ। তিনিও তাদের মত চাকুরীর আসায় বেকার হয়ে পরিবারের কাছে বোঝা বলে কেউ তাকে ভালো চোখে দেখতেন না। একদিন তিনি পুকুরে মাছ চাষ করার জন্য তার পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা ধার নেন। ২০০৪ সালের দিকে ওই ১০ হাজার টাকায় দুটি পুকুর লীজ নিয়ে মাছ চাষ শুধু করেন। বর্তমানে ৮ বছরের ব্যবধানে তিনি ২০টি মাঝারি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। ইতোমধ্যে তিনি মোহনপুর উপজেলার গোপালপুর এলাকায় একটি ১০০ বিঘার একটি পুকুরে মাছ চাষ করার প্রজক্টে হাতে নিয়েছেন। এই প্রজেক্টটি তিনি হাতে নিয়ে টাকার অভাবে একটু সমস্যায় রয়েছেন। একারণে তিনি ব্যাংককে লোন গ্রহণের জন্য যোগাযোগ করেও কেউ তাকে তার চাহিদা মত লোন দিচ্ছেন না। তার মতে এদেশে ব্যাংকাররা একটু সহানুভূতি দেখালে তার মত আরো অনেক বেকার যুবকরা দেশে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে অন্যতম ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী তিনি। এতে কোন সন্দেহ নেই তার। তবে, পুকুরে মাছ চাষের ক্ষেত্রে চুরি ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন সমস্যায় তারা একটু আতঙ্কে থাকেন। এছাড়া উপজেলা মৎস্য অফিস তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তার ক্ষেত্রে বরাবরই উদাসিন বলে মন্তব্য করেছেন মামুনসহ আরো অনেকে।
এনিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার বায়েজিদ আলম জানান, প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ পারসেন্ট হারে মাছ চাষ বাড়ছে। পুরো উপজেলায় প্রায় সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানা সাড়ে ৫ হাজার পুকুর জলাশয়ে এক হাজার মৎস চাষী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে থাকেন। দিনদিন মাছ চাষে ব্যাপকতা বাড়ছে। আগামীতে মাছ চাষের সম্ভাবনায় দেশের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে তানোর বড় ভূমিকা পালন করবে। সরকারী সুযোগ সুবিধা হিসাবে এঅঞ্চলের প্রকৃত বেকার যুবক ও চাষীদেরকে পুকুর প্রস্তুত, পুকুরে পোনা নির্বাচন ও পোনা উৎপাদনসহ মাছের খাদ্য প্রয়োগ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে। এপর্যন্ত মৎম্য অফিস থেকে প্রায় ১০ হাজার বেকার ও মৎস্য জীবিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন তারা। মাছ চাষে ব্যাপকতা বাড়াতে বেকার যুবদের বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন মন্তব্য করেন তিনি।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!