ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ভরা রবি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সারের জন্য হাহাকার পড়েছে কৃষকদের। দোকানে দোকানে ঘুরেও সার পাচ্ছেন না তারা।
কোথাও তা পাওয়া গেলেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে কৃষকদের । প্রতি বস্তা ৮০০ টাকার ইউরিয়া ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাড়ে ৬শ টাকার পটাশ ৯০০ টাকা এবং ১১শ টাকার টিএসপি ১৩শ থেকে ১৫শ টাকায় বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে তাদের।
জমি তৈরী করে ফেলে রেখেছে অনেকে। শুধু সারের অভাবে গম,আলু,ভূট্টাসহ শীত কালীন ফসল চাষ করতে পারচ্ছেন না তারা। বিস্তৃন্ত জমি পড়ে আছে । গত ১৫-২০ দিন ধরে এই সংকট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে। সোমবার জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও গ্রামের বিশ্বনাথ সাহা সারের জন্য জেলা সদরের মাদার গঞ্জ বিএডিসির সারের গুদামে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে সার না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। তার মতো সদর উপজেলার ঢোলার হাট গ্রামের রফিকুল ইসলাম দুর্ভোগের শিকার হন। রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া গ্রামের চাষী শরিফ উদ্দিন শরিফ অভিযোগ করে বলেন তিনি গম আবাদের জন্য দুই বস্তা পটাশ ৯শ টাকা এবং টিএসপি ১৫শ টাকা দরে কিনেছেন । তিনি জানান দোকান দার বিক্রয় রশিদ দেয় নি। চড়া দামে সার বিক্রি প্রসঙ্গে বিএডিসির সার ডিলার সমিতির সভাপতি এনামুল হক সরকার বলেন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা,চাঁদা বাজী ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় হয়তো কেউ কেউ খেয়াল খুশি মতো বিক্রি করচ্ছে।
জানা গেছে,কৃষক পর্যায়ে এ জেলায় সার ও বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ৩ টি পৌর সভা ও ৫১ টি ইউনিয়নে বিসিআইসির ৫৮ ও বিএডিসির ১৪৩ জন ডিলার নিযুক্ত করা হয়েছে। জেলায় সার না আসায় বিএডিসির ও বাফার গুদামে সার মজুদ শূণ্য হয়ে পড়েছে বলে জানান বিএডিসির গুদাম ইনচার্জ রুহুল আমিন। তিনি আরও বলেন,অবরোধ হরতালের কারণে সার বোঝায় গাড়ি জেলায় আসতে পারচ্ছে না। গাড়ি আসলেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
কৃষি বিভাগ জানায় এবার ৫৭ হাজার ৩শ ২৫ হেক্টর জমিতে গম,১০হাজার ৫শ ১৫ হেক্টরের সরিষা,২২ হাজার ৫শ ৭৯ হেক্টরে আলু ও ২১ হাজার ৪শ ৯৮ হেক্টরে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধার্য্য করা হয়েছে। কিন্তু সার ও বীজ সংকটের কারনে সিকিভাগ জমিতে চাষ করা সম্ভব হয়নি। অথচ গতবার এ সময়ে অর্ধেকেরও বেশী জমিতে আবাদ হয়েছিল।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের শস্য বিশেষজ্ঞ জাহেদুল ইসলাম বলেন,সময় মতো সার সেচ দিতে না পারলে কাংখিত ফসল ফলানো সম্ভব নয়। সার ও ডিজেল সরবরাহ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ও সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন সংকট নেই । কেউ বেশি দামে বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।