ইসলামপুর প্রতিনিধি : ইসলামপুর উপজেলার অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রথম পর্যায়ে কাজের প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের টাকা হরিলুটের জন্য চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে দায় সাড়াভাবে প্রকল্পের কাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুলকান্দি ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পের অধীনে ২৬৬ জন শ্রমিক। আঃ রহিম মেম্বারের প্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হইতে দুলাল বিএসসির বাড়ি পর্যন্ত মেরামত ও বেম্বু প্য্লাাসেটিং নির্মাণে ৬৫জন শ্রমিক ধরা থাকলেও উপস্থিতি পাওয়া যায় ৩৫জন। সায়েব আলী মেম্বারের প্রকল্পে মানুর বাড়ি হইতে মুডির দোকান পর্যন্ত প্রকল্পে লেবার পাওয়া যায় ৩৬ জন। সুরুজ আলী মেম্বারের প্রকল্পে ১২০ জন শ্রমিক ধরা থাকলেও তিন মেম্বাÍ মিলে এখানে শ্রমিক পাওয়া যায় ৭০জন। মায়মানু মহিলা মেম্বারের জোদ্দার পাড়া চৌ রাস্তা হইতে কাইলের দোকান হয়ে দেলু মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত প্রকল্পে ৪৫জন শ্রমিক ধরা থাকলেও সেখানে কোন শ্রমিক পাওয়া যায় নি। সুরুজ মেম্বারের ধনতলা লুৎফরের বাড়ি পাঁকা রাস্তা হইতে কুলকান্দি সীমানা পর্যন্ত ও বেম্বু প্যালাসেটিং নির্মাণে ১২০জন শ্রমিক ধরা থাকলেও ৩মেম্বার মিলে সেখানে শ্রমিক পাওয়া যায় ৭০জন। বেলগাছা ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ৩৯৪ জন, শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও বাবুল মেম্বার ও টিক্কা মেম্বারের প্রকল্পে কোন শ্রমিক পাওয়া যায় নি।
এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ব্যাপারটি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান- প্রত্যেক শ্রমিকের কাছে প্রকল্পের সভাপতি ও সংশ্লিষ্টরা প্রতি শ্রমিকদের কাছে ১ থেকে ২ হাজার করে টাকা নিয়ে নামের তালিকা করা হয়েছে।
১ডিসেম্বর থেকে কর্মসূচি কাজ শুরু হলেও প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে কাগজে কলমে শ্রমিকদের তালিকা থাকলেও শ্রমিক উপস্থিতি নেই বললে চলে। কোন কোন প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত শুরু করা হয়নি।
অভিযোগ উঠছে, প্রতিটি ইউনিয়নের প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা কোন নীতিমালা না মেনে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ করছে। হতদরিদ্র শ্রমিকদের বদলে স্বচ্ছল দলীয় শ্রমিক, ভিআইপি শ্রমিক ও নামে বেনামে ভূয়া শ্রমিকদের নামে শ্রমিক নিবন্ধন হওয়ার ফলে প্রকল্পের কাজে সিংহভাগ শ্রমিক উপস্থিত থাকছে না। ফলে প্রকল্পের সভাপতিরা চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক না নিয়ে দায়সাড়াভাবে প্রকল্পের কাজ চালিয়ে দরিদ্রদের টাকা লুটে নিচ্ছে।
সরেজমিনে প্রকল্প পরিদর্শনে আরো জানাগেছে, প্রকল্পের কাজে সিংহভাগ শ্রমিক উপস্থিত না থাকলেও হাজিরা খাতায় শতভাগ উপস্থিত দেখানো হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নের এ সব প্রকল্পের কাজের তদারকির জন্য ১জন করে ট্র্যাগ অফিসার থাকলেও রহস্যজনক কারণে তারা নিয়মিত তদারকি না করায় প্রকল্পে এ হেন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সহ প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা নিজেদের আখের গোছানো টার্গেট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কর্মসৃজন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে কাজের ব্যাপক অনিয়মন দূর্নীতি হলেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে।