জাকির হোসেন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : ছাতক সিমেন্ট কারখানায় ১শ’ ৩৫জন শ্রমিক-কর্মচারীর স্থায়ী নিয়োগে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বার-বার নিয়োগ ও বাছাই কমিটি রদবদল-পদত্যাগ করা, জাল-জালিয়াতি ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে কারখানা শ্রমিকদের আপত্তির মুখে অনভিজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কারখানার সিবিএ সভাপতি হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক আবু মোহাম্মদ সেলিম। বর্তমানে কারখানায় উৎপাদন খাতে নাজুক অবস্থার কারনে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে আরো ১শ’ ৩৫জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ নিয়োগে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। নিয়োগে অনিয়মের কারনে শ্রমিক-কর্মচারীরা নিয়োগপত্র পাবার আগেই ২৬ নভেম্বর বিসিআইসি ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে। কিন্তু এ ব্যাপারে তদন্তের আগেই তড়িগড়ি করে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীদের হাতে নিয়োগপত্র পৌঁছে দিয়েছে। শুক্রবার রাতে কারখানায় বিসিআইসি’র প্রধান কার্যালয়ের জিএম প্লানিং জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত টিম কারখানায় এসে পৌঁছে গতকাল শনিবার সকাল থেকেই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন তারা। কারখানার অস্থায়ী শ্রমিক চাকুরী বঞ্চিত আবু সুফিয়ান বাবুল, মানিক মিয়া, চেরাগ আলী, মোজাম্মেল হোসেন, মজনু মিয়াসহ লোকজন জানান, তদন্ত টিম কারখানায় এসে পৌঁছালেই কারখানা রেষ্ট হাউজে তাদের ঘেরাও করে রেখেছে শ্রমিক সংগঠন ১৬৬২’র লোকজনসহ বহিরাগতরা। এখানে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা। তারা আশংকা প্রকাশ করছেন বিভিন্ন সময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা এসে রেষ্ট হাউজে অবস্থান করে তাদের সাথেই কথা বলে চলে যাচ্ছেন। এটাও কি সেরকম তদন্ত হচ্ছে। ১শ’ ৩৫জন শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে বিসিআইসি ও কারখানার এমডি’র কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগ-আপত্তির বিষয়টি কি খতিয়ে দেখবেন। সিমেন্ট কারখানার কো-অপারেটিভ সমবায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান জানান, নিয়োগে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শ্রমিকদের জোরালো আপত্তি উপেক্ষা করে অস্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্য চালিয়ে একটি মহল এর আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। কারখানার সিবিএ সাধারণ সম্পাদক আবু মোহাম্মদ সেলিম জানান, গত ১৬ আগষ্ট কারখানার এমডি’র কাছে এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। স্থায়ী নিয়োগে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকার শর্ত থাকলেও একদিনের অভিজ্ঞতা নেই এবং কো-অপারেটিভ সমবায় সমিতির সার্টিফিকেট জাল করেছে এমন শ্রমিক-কর্মচারী এ নিয়োগের অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। কারখানার এমডি শফিকুল ইসলাম জানান, নিয়োগের ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে এ জন্য বিসিআইসি তদন্ত টিম গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান বিসিআইসি’র জিএম প্লানিং জাহাঙ্গীর আলমের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিয়োগের ব্যাপারে সব বিষয়ের তদন্ত হচ্ছে। এ তদন্তে দু’তিনদিন সময়ও লাগতে পারে।