আজহারুল হক, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বরাবরই নির্বাচনোন্মুখ। তবে বিএনপির শরীকরা শুধু নির্বাচন বিমুখ। দৃশ্যপট নির্বাচন কমিশন ঘোষিত আগামী ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহন না থাকলেও আন্দোলন বা সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। গফরগাঁও উপজেলা বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একটি পরিবার সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। স্থানীয় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফজলুর রহমান সুলতান দলীয় সাংসদও ছিলেন। রাজনীতির মাঠে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে অভিষেক ঘটে তারই সহোদর শিল্প উদ্যোক্তা এবি সিদ্দিকুর রহমানের।
আওয়ামী লীগের দুর্গে বজ্রাঘাত করলেও বৈতরনী পার হতে পারেননি। প্রচার রয়েছে অগ্রজ ভ্রাতা ফজলুর রহমান সুলতানের কর্মীদের আত্বঘাতী সিদ্ধান্তে জয় লাভে বিফল হন সিদ্দিকুর রহমান। পরে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা লাভের পর এই প্রথমবার গফরগাঁওয়ে তৃণমুল বিএনপির সম্মেলনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করা হয়। পিছন ফিরে তাকালে বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তনের পিছনে এবি সিদ্দিকুর রহমানের ভুমিকাই স্পষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়। নবম সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েও হারাতে হয়েছে ভূয়া ব্যাংক প্রতিবেদনের কারনে। ব্যাংকের অনাপত্তি পত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিলেও অজ্ঞাত কারনে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। প্রচার রয়েছে বিরোধী দলীয় প্রার্থীর ইন্ধনেই তাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে দুরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।
এক/এগারোর সরকারের দমন পীড়নের ধকল কাটাতে আবারও কেন্দ্র থেকে দল পুর্নগঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় দৃঢ়চেতা সিদ্দিকুর রহমানের উপর। বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের যোগ্য নেতৃত্ব তৈরীতে আবারও মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়ে সংগঠনকে তৃণমূল থেকে সদর পর্যন্ত শক্ত কাঠামোতে বেধে ফেললেন। সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নেতা-কর্মীদের অবিচল আস্থায় চলে আসেন সিদ্দিকুর রহমান। ইতোমধ্যে লড়াই সংগ্রামে রাজপথে থেকে অসংখ্য মামলা হামলায় সহযোদ্ধা হয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের। এদিকে সংগঠন কেন্দ্রীক আন্দোলনে সম্পৃক্ত না হলেও অগ্রজ ফজলুর রহমান সূলতান উপজেলা কৃষক দলকে সামনে রেখে অল্প বিস্তর সাংগঠনিক কর্মকান্ড দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন মাঝে মধ্যেই। তবে বয়সের কারনে মূল ধারার রাজনীতিতে শারীরিকভাবে সরব উপস্থিতি না থাকলেও বিএনপির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ছায়ার মতন। মাঝে মধ্যে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে উল্কাপিন্ডের মতোন দু’একজনকে দেখা গেলেও দলের দুর্দিনে ছিলেন অনুপস্থিত। সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছিটেফোটা অংশ গ্রহনও তাদের কারো ছিলনা। বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ড্যাব নেতা ডা: এ জেড এম জাহিদ হাসান উঁকি ঝুকি দিয়েও এলেননা স্থানীয় রাজনীতিতে।
এদিকে ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কাশেম আরজু মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তাকে কখনোই এলাকায় দেখা যায়নি। বিএনপি নেতা এডভোকেট আবুল ফাত্তাহ খান ও কেন্দ্রিয় স্বেচ্ছা সেবক দলের সহ-দফতর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতা মাসিক মদিানার সহকারী সম্পাদক আহমদ বদর উদ্দিন খান এরা সকলেই ১৮ দলীয় জোটের মনোনয়ন হিসেবে নিজেদের দাবী করলেও হরতাল-অবরোধসহ কোন আন্দোলনেই তাদের উপস্থিতি নেই।