শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বহুল আলোচিত স্বৈরাচার পতন দিবস আজ। ১৯৯০ সালের এই দিনে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করেন সামরিক-একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। ৩ জোটের ঐতিহাসিক ঐক্য ওই পতনকে ত্বরান্বিত করেছিলো। আর তার পতনের মধ্য দিয়ে দিয়ে মুক্তি পায় গণতন্ত্র।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। ক্ষমতা দখলের পর দেশের রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে গণবিরোধী ধারা প্রবর্তন করেন তিনি। এরশাদের প্রায় ৯ বছরের শাসনামলেই দেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়। একপর্যায়ে সারা দেশে এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।
১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা পলিটেকনিকের ছাত্র মনিরুজ্জামান হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকল ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামে। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর হরতালের সময় ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ শ্লোগান গায়ে লেখা যুবলীগ কর্মী নূর হোসেনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে, ওই দিন সেনা ও পুলিশ বাহিনী আমিনুল হুদা টিটোকে মেরে গুম করে। ওই ঘটনায় সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এরশাদ হঠানোর আন্দোলনে নেমে পড়ে। আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এরশাদ ১৯৯০ সালের ৫ ডিসেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। দীর্ঘ ৯ বছরের শাসনের অবসান ঘটে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর।
এদিকে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্রে বিজয় উপলক্ষে প্রত্যেক বছরই দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে আসছে। আর জাতীয় পার্টি দিনটিকে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে এ বছর দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল এই দিবসে তেমন কোন কর্মসূচি দেয়নি।
সময়ের বিবর্তনে ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টি এখন দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতার লড়াইয়ে তুরুপের তাসে পরিণত হয়েছে। উভয় রাজনৈতিক দলই ভোটের রাজনীতিতে স্বৈরশাসকে নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার হিসাব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। আর প্রতিদিন সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন এরশাদ।