মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বেতাগী (বরগুনা) : মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান বেতাগীর মোঃ আবদুর রশিদ সিকদার(৬১)।বাড়ি উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের রানীপুর গ্রামে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চির উজ্বল হয়ে থাকলেও স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম ওঠেনি তার। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আজও দ্ধারে দ্ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। কাটছে অভাব অনটনে তার সংসার।
স্বাধীনতা সংগ্রামের এই বীর সৈনিক যুদ্ধকালীন ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে সেক্টর কমান্ডার মেজর এম.এ.জলিলের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে যুদ্ধ করেছেন বাবুগঞ্জের রঘুনাথপুর এলাকায়।তার কমান্ডার ছিলেন নুরুউদ্দিন আহম্মেদ। যুদ্ধের পর যোগদেন বরিশালের প্রতাপপুর জাতীয় মিলিশিয়া ক্যাম্পে। আবদুর রশিদ সিকদার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৭১ সনে প্রশিক্ষনের জন্য ভারতের চাকুলিয়ায় চলে যান। সেখানে ১৫ দিনের প্রশিক্ষন দেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা তো দুরের কথা, অনেক দৌড়ঝাঁপ করেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়ই তার নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি।
জানাগেছে, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুিক্তর জন্য বেতাগী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী আহম্মদের প্রত্যয়ন পত্র ও সুপারিশসহ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান‘র নিকট আবেদন জমা দিয়েছেন। পরিতাপের বিষয় তার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোন সাড়া পাননি। বিধিবাম এসব করেও আজও তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত করা যায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান,তিনি অবহেলার শিকার হয়ে আসছেন।
মা লালবরু বেগম বেঁচে থাকলেও বাবা কদম আলী সিকদার মারা গেছেন আরও অনেক আগে। পৈত্রিক জমিজমা তেমন নেই বললেই চলে। যে টুকু রয়েছে তা দিয়ে কৃষি কাজ করে চলে জীবন জীবিকা। স্ত্রী রেবেকা বেগমসহ ২ ছেলে,১ মেয়ে নিয়ে ৫ সদস্যর তার পরিবার। কৃষি নির্ভর কাজের এ আয়ে পরিবারের ভরন পোষনেই তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি সন্তানের লেখা পড়ার খরচ চালাতে আজ সে নিরুপায়।এর আগে তিনি খুলনায় ইপিআরে রেশন পরিমাপের কাজ করতেন। বাংলাদেশ দেশরক্ষা বিভাগের প্রদত্ত তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনীর অধিনায়ক আতাউল গনী ওসমানী স্বাক্ষরিত তার সনদ নং-১১২৯০৫।
বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করলেও তালিকায় নাম না থাকায় হতদরিদ্র এই আবদুর রশিদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। ভোগ করতে পারেননি রাষ্টীয় কোন অধিকার ও সামান্যতম মর্যাদা। আবদুর রশিদের দাবি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আজ তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
