এম লুৎফর রহমান নরসিংদী প্রতিনিধি : বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থেকেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বধীন ১৮ দলীয় জোট নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে বদ্ধ পরিকর। দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপি দেশব্যাপী হরতাল, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ নানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নরসিংদী বিএনপি’র আন্দোলনের আগুন তেতে উঠছে না। কারণ নরসিংদী বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা গা বাঁচিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক যোদ্ধা মহল এমনই অভিমত প্রকাশ করেছেন। ব্যক্তিগত হিংসা বিদ্বেষের রোষানল ও পওে কথিত সংস্কার ইস্যুতে নরসিংদীর তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীদেও কোণঠাসা করে রাখে একটি চত্রæ।ফলে নরসিংদী বিএনপিতে হয় বিভাজন। দুতিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে নরসিংদীর বিএনপি। নরসিংদী জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকন ও সহ-সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মনজুর এলাহীর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ দুটি পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করে। অবশেষে দলীয় স্বার্থে তারা একমঞ্চে উঠেন এবং একাত্ব হয়ে দলীয় কর্মসূচী পালন করছেন। এছাড়াও দলীয় স্বার্থে নরসিংদীর দক্ষিণাঞ্চলের মুকুটহীন সম্রাট খ্যাত আবু সালেহ চেীধুরীর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এসবের ফলে দলীয় কার্যক্রম কিছুটা বেগবান হলেও সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের মাঝে এখনো স্বতঃস্ফুর্ততা আসেনি। কারণ খায়রুল কবির খোকন নিস্ত্রিয় হয়ে থাকা দক্ষ সংগঠকদের এখনো দূরেই ঠেলে রেখে দিচ্ছেন, কাছে টানেননি।
বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অমর বাণী “ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ” নরসিংদী জেলা বিএনপি’র বর্তমান প্রথম সারির নেতারা তা পুরোপুরি বিশ্বাস করেন না বলেই প্রতীয়মান হয়। তাইতো অতীতে সফল আন্দোলনের অনেক দক্ষ সংগঠকই এখনো দলীয় কার্যক্রম নিস্ত্রিয়, নির্জীব রয়েছেন। ফলে নরসিংদীতে বিএনপি’র আন্দোলনে ঢিলেভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে নরসিংদীর মাধবদী ও শিবপুরে এর ব্যতিক্রম। আবু ছালেহ চেীধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করায় মাধবদী বিএনপি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহীর নেতৃত্বে শিবপুর বিএনপিতে অনেকটাই চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে।
বিগত ৩ দফা হরতালে কর্মসূচীই এর জ্বলন্ত প্রমান। যে কোন সফল আন্দোলনের পেছনে রয়েছে সাংগঠনিক দক্ষতা। দক্ষ সংগঠক ছাড়া আন্দোলনে স্বতঃস্ফুর্ততা আসেনা। আর তাই নরসিংদী বিএনপি’র আন্দোলনও নিস্প্রভ। সভা সমাবেশে মিছিলে জনসমাগম হলেও নেতাকর্মীদেও মাঝে নেই স্বাতঃস্ফুর্ততা। বিএনপি’র হরতাল কর্মসূচীতে সমাবেশ চলাকালে নেতাকর্মীদের মুখে শোনা যায়, বিএনপির এমপি হলে খোকন হবেন, মন্ত্রী হলে খোকন হবেন, আমাদের তো কিছুই না অযথা রিস্ক নিব কেন? এ মামলায় পড়লে বা অ্যারেস্ট হলো কেউ খোঁজখবর নেয় না এমন আক্ষেপ। নরসিংদীতে নেতাদের ব্যক্তি হিংসা চরিতার্থ করণের ফলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা একাত্ব নয়। আর তাই নরসিংদী বিএনপি’র আন্দোলন চলছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সমঝোতায়, সেই সাথে মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বিরোধী গ্রæপের সহযোগিতায়। পুলিশের নির্দেশনা মতেই চলছে সবকিছু। স্বল্প সংখ্যক পুলিশ থাকলেও ব্যারিকেড ভাঙার জোরালো চেষ্টা নেই। নামকাওয়াস্তে বাক- বিতন্ডা হচ্ছে মাত্র। যেন পত্রিকার জন্য ফটো সেশন ও টিভি মিডিয়ার জন্য ভিডিও ফুটেজ প্রদান করাই মূখ্য উদ্দেশ্য। নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন তোষামোদ কারীদের খপ্পরে পড়ে দলীয় অবস্থান ভুলে গেছেন। তাদের বদৌলতেই সভা সমাবেশ মিছিলে চলছে শুধু খোকন বন্দনা, দল হচ্ছে উপেক্ষিত । এ ধারা চলতে থাকলে নরসিংদী বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তির ত্রæম ক্ষয়িষ্ণুভাব অব্যাহত থাকবে এবং এক সময় নরসিংদীতে বিএনপির দুর্গ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হয়ে একেবারেই ভেঙে যাবে।
এ অবস্থার উত্তরণ চান নরসিংদী বিএনপির তৃণমুল নেতাকর্মীরা। তাই তাদের প্রত্যাশা নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ খায়রুল কবির খোকন নিজ উদ্যোগে দলের পরিক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মী ও দক্ষ সংগঠকদের অতি দ্রুত দলীয় কার্যত্রুম এ সক্রিয় করবেন। এর ফলেই সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে স্বতঃস্ফুর্ততা আসবে এবং দলীয় কার্যক্রম তথা আন্দোলন দুর্বার গতি লাভ করবে। এভাবেই নরসিংদী বিএনপির হুত গেীরব ও ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।