শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানকে গণতন্ত্রের ওপর ‘পদাঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন। ৩০ নভেম্বর শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে তার নেতৃত্বে পেশাজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান বিরোধী দলের কার্যালয়ে পরিদর্শনকালে তিনি ওই মন্তব্য করেন। এসময় তিনি বিএনপি কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখে সাংবাদিকদের বলেন, আজ এখানে এসে গণতন্ত্রের নামে যা দেখলাম, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার বসার চেয়ার ও দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বসার চেয়ার যেভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে, এটা গণতন্ত্রের প্রতি পদাঘাত করা হয়েছে। আমরা এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
পেশাজীবী প্রতিনিধি দলে ছিলেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম মিয়া, ড্যাবের যুগ্ম মহাসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।
বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে এই প্রতিনিধিদলটি বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে প্রধান ফটকের সামনে গেলে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা প্রথমে তাদের ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। কিছুক্ষণ বাদানুবাদের পর পুলিশ কলাপসিবল গেইটটি খুলে দিলে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে ঢোকেন মাহবুব ও তার সঙ্গীরা। দ্বিতীয় তলায় বারান্দার দিয়ে ভাঙা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে খন্দকার মাহবুব বিএনপি কার্যালয়ের কর্মীদের কাছ থেকে ভোরের পুলিশি অভিযানের বিবরণ শোনেন।
তাকে জানানো হয়, মই ও রশি বেয়ে দোতলায় উঠে দরজা ভেঙে পুলিশ সদস্যরা কার্যালয়ে ঢোকে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় বিভিন্ন কক্ষ ভাংচুর করে। এরপর রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমদকে আটক করে নিয়ে যায়।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা যা আজ দেখেছি, তাতে আমরা লজ্জিত। একাত্তরের পর আমরা এরকম ঘটনা দেখিনি। এরকম দমন নীতির করে সাময়িকভাবে হয়তো ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু এর পরিণতি ভালো হবে না। বিরোধী দলের অবরোধে রাজপথে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য সরকারের বিশেষ বাহিনীকে দায়ী করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা। তিনি দাবি করেন, একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে জনগণ স্বেচ্ছায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
নয়া পল্টনের কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের সময় কর্তব্যরত সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার নিন্দা জানান রুহুল আমিন গাজী। তিনি বলেন, এভাবে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলা ও একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ভাংচুর ও তছনছের ঘটনা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেয়ার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি রিজভী ও বেলালের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন এই সাংবাদিক নেতা।