বৃহস্পতিবার , ২৮ নভেম্বর ২০১৩ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

বগুড়ায় পুলিশের গুলিতে যুবদল নেতা নিহত : বুধবার হরতাল

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
নভেম্বর ২৮, ২০১৩ ১২:০০ অপরাহ্ণ

BOGRA PIC MARDER 26-11-13-2এস.গুলবাগী, বগুড়া :  ১৮দলের ডাকা টানা ৪৮ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়েছে বগুড়াসহ গোটা উত্তরাঞ্চল । ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটেছে বিভিন্নস্থানে। এসময় পুলিশের গুলিতে আবু ইউসুফ (২৬) নামের এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধসহ আরও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। নিহত যুবদল নেতা বগুড়া শহরের ২১ ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শহরের ঢাকন্তা এলাকার মুকুল হোসেনের ছেলে। যুবদল নেতা নিহতের প্রতিবাদে আজ বুধবার বগুড়া জেলায় সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছে ১৮ দল।
অবরোধের কার্যকরীতায় রাজধানীর সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে উত্তরাঞ্চল। সকালের প্রথম দিকে সীমিত আকারে রেল চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালানো হলেও বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীদের শক্ত অবস্থানের কারনে সেই চলাচল পরে বন্ধ হয়ে যায় । সড়কপথ বন্ধ হয়ে গেছে। শহর ও এর আশ পাশে জেলার বিভিন্নস্থানে সড়ক ও রেল পথ অবরোধ করে রাখা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া শহরের বনানী মোড়ে সমাবেশ করা নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেলা নির্বাচন অফিসে ককটেল নিক্ষেপ, উপজেলা নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ ও যানবাহন ভাংচুরের মধ্যদিয়ে বগুড়ায় ১৮ দলের ডাকে অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। অবরোধের কারনে দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে বগুড়া জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শহরজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বনানী মোড়ে যুবদল নেতাকর্মীরা সমাবেশ করার প্রস্তুতি নেয়। এসময় পুলিশ সমাবেশ করতে নিষেধ করলে যুবদল নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল থেকে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরন ঘটানো হলে পুলিশ মিছিলে ধাওয়া দেয়। এসময় পুলিশের সাথে যুবদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে যুবদল কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি পুলিশের নিন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে সেখানে র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা পৌঁছে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যুবদল নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করলে ইউছুস ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং আরো বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। নিহত ইউছুবের লাশ সহ পুলিশ আরো ২ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এরমধ্যে কমরেড নামের একজনের অবস্থা আশংকা জনক হলে তাকে তাৎক্ষনিক ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। জাকারিয়া নামে আরেক যুবদল কর্মি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহতদের মধ্যে জেলা যুবদল সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারসহ অন্যান্যদের  বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের গুলিতে যুবদল নেতা নিহতের প্রতিবাদে আজ বুধবার বগুড়া জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে ১৮ দল। শহরজুড়ে জচরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এর আগে সকালে অবরোধের সমর্থনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মিরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করে। ১৮ দলের কর্মিরা শহরের বনানী, চারমাথা, মাটিডালিসহ চারপাশে অবরোধ সৃষ্টি করে। কোথাও গাছের গুড়ি ফেলে আবার কোথাও ইটের স্তুপ তৈরি করে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয় বেশ কিছু জায়গায়। রাস্তায় যানবাহন না থাকায় অবরোধকারীদের বেশি সময় রাস্তায় দেখা যায়নি। বিশেষ করে পুলিশ আসার সাথে সাথেই তারা নিরাপদ স্থানে সরে যায়। ফলে পুলিশের সাথে তেমন কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত সদর উপজেলা  নির্বাচন অফিসের সামনে পর পর ৩-৪টি ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে নির্বাচন অফিসের ভেতরে আগুন দেয়। আগুনে অফিসের গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র পুড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মিরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ভোররাতে সদরের সাবগ্রামে রেললাইনে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। পরে সেখানে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। এর আগে সোমবার রাতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে ৭-৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া সোমবার রাতে বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। মিছিলকারীরা সদর পুলিশ ফাঁড়ি লক্ষ্য করে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। রাত ৮টার দিকে সদরের এরুলিয়ায় একদল যুবকের ধাওয়ায় চালক নিয়ন্ত্রন হারালে প্রাইভেট কার পানিতে পড়ে যায়। ওই গাড়ীতে নওগাঁর আওয়ামীলীগ নেতা ছিলেন। তিনি দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে ঢাকা থেকে বাড়ীতে ফিরছিলেন বলে জানাগেছে। জনতার মারপিটে তিনি আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তবে, তার পরিচয় জানা যায়নি। সোমবার রাত আনুমানিক ১০টায় সরকারী আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের সরকারী বাসভবনে একদল দূর্বৃত্ত অগ্নিসংযোগ করে। এসময় তারা ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। দূর্বৃত্তরা অধ্যক্ষের প্রাইভেট কারে আগুন দেয় এবং কলেজ বাস ভাংচুর করে। পুলিশ এসব ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১২জনকে আটক করেছে। একই সময় বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের বাসার গেটে দূর্বৃত্তরা হামলা করে লাইট ভাংচুর করে। শেরপুরে নওগাঁ সদরের আ’লীগ দলীয় এমপির গাড়ীর কাঁচ ভাংচুর করা হয়।
এদিকে, আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে পুলিশ ও র‌্যাবের সাথে সোমবার সন্ধ্যা থেকে ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। তারা টহল জোরদার করেছে। গতকাল বিকেলে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ১৮ দলীয় জোট। এসব সমাবেশ থেকে তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবি জানানো হয়।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!