আজহারুল হক, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : একের পর এক টানা হরতালের পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবারও টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধের কারণে ময়মনসিংহের গফরগাও উপজেলার সবজির গ্রামগুলো থেকে পাইকারি সবজির মোকাম ঐতিহ্যবাহী সালটিয়ার পাইকারী সবজি বাজার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদিত সবজি কৃষকদের ক্ষেতেই পড়ে থাকছে। এতে করে খুচরা বাজারে সবজি পূর্বের দামে বিক্রি হলেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
মঙ্গলবার সকালে সবজির পাইকারী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বালুয়াকন্দা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম মুলার শাক, কাচারীপাড়া গ্রামের সোহেল মিয়া লাল শাক, জিরাতীপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম পালংশাক নিয়ে এসেছেন। তারা জানান, অবরোধের কারনে পানির দরে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
সালটিয়ার বাজারের পাইকারী সবজি বিক্রেতা মুজিবুর রহমান ও দুলাল জানান, শীতকালীন সবজির এখন ভরা মৌসুম। সপ্তাহের ৭ দিনেই এখানে পাইকারী সবজির হাট বসে। প্রতিদিন এ হাট থেকে বেশ কিছু সবজির ট্রাক ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়ে থাকে। তবে একের পর এক হরতাল শেষে আবারো অবরোধের কারনে সবজি গফরগাঁওয়ের বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না। তিনি সবজির বাজার ও পরিবহন হরতালের আওতামুক্ত রাখার আহবান জানান।
উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া, জিরাতিপাড়া গ্রামের এরশাদ ও আব্দুল হাই ৮ মন বেগুন নিয়ে সালটিয়ার সবজির হাটে এসে দেখেন বেগুনের দাম খুবই সস্তা। তারা জানান গত দুদিন আগেও পাইকারী দরে প্রতিমন বেগুন ১৩ থেকে সাড়ে ১৩শ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৪৫ কেজি দরে বেগুন বিক্রি হলেও অবরোধের কারনে প্রতিমন বেগুন ৭শ ৪০ থেকে ৭শ ৬০ টাকা মন দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
পাইকারী সবজি বিক্রেতা ইব্রাহীম ও কালাম বলেন, অবরোধের কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবজির পাইকাররা না আসায় কৃষক সবজির ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
গফরগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় শাক-সবজি চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। এখানকার উৎপাদিত সবজি উপজেলার সবজির চাহিদা মিটিয়েও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রায়ই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
