শীত মৌসুমে শুরু হয় খেঁজুর ও তালের রস উৎপাদন। আর এ শীত মৌসুমে অবৈধ ব্যবসায়ীরা ওই রস সংগ্রহ করে তৈরী করে এক প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি। যা পান করে বিপদগামী হয় কিশোর-যুবক সহ শ্রমজীবি মানুষ। তবে সরকার মহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করলে ওই রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে শিল্পে রুপ দিতে পারে বলে একাধিক মহল মন্তব্য করেন। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের মাটি তুলনামুলকভাবে অনেক বেশী উর্বর। যার ফলে খেঁজুর বা তালের বীজ জমিতে পড়লেই গাছ হয়। এসব গাছ গরু- ছাগলে খেয়ে ফেলার ভয়ও নেই। কীট পতঙ্গও ক্ষতি করতে পারে না।
কৃষি বিভাগ জানায়, পরিকল্পনা মত এসব গাছ রোপন করলে এক বিঘা জমিতে প্রায় ১ থেকে দেড় শত গাছ লাগানো সম্ভব। গাছ লাগানোর ৭/৮ বছর পর থেকে প্রায় ২৫/৩০ বছর পর্যন্ত রস অথবা ওই রস থেকে গুড় উৎপাদন করে আয়ের উৎস হওয়া সম্ভব। শহরের গোলাহাট এলাকার গাছি আসাদুর রহমান বাটু সরকারের সাথে কথা হয়, তিনি বলেন, তার জমিতে লাগানো রয়েছে প্রায় ২ হাজার খেঁজুর গাছ। শীত মৌসুমে একেকটি গাছ থেকে সর বিক্রি করে তিনি পান ১ থেকে দেড় হাজার টাকা। এভাবে তিনি ২ হাজার গাছ থেকে আয় করেন প্রায় ৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে তাকে ব্যয় করতে হয় মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। অপরদিকে উপজেলার বাঙ্গালিপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর এলাকার তাল গাছি জগেন্দ্রনাথ রায় জানান, তার এলাকায় রয়েছে প্রায় ১ হাজারের মত তাল গাছ। ওই এলাকার গাছিরাও রস বিক্রি করে দেয় অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছে। আর অবৈধ ব্যবসায়ীরা ওই রস দিয়ে তৈরী করছেন নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি। যা পান করে বিপদগামী হচ্ছে যুব সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ। বাড়ছে ছিনতাই, ধর্ষণ সহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম।
এ অঞ্চলের একাধিক তাল ও খেঁজুর গাছি সহ সাধারন মানুষ জানান, সৈয়দপুর উপজেলা জুড়ে রয়েছে প্রায় ২০ হাজারের ও বেশী তাল ও খেঁজুর গাছ। সরকার যদি আখের (কুশার) এর পাশাপাশি ওই সব গাছের রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করতো, তাহলে ঘুচে যেতো অর্থর্নৈতিক সংকট। সরকারীভাবে উদ্দ্যোগ থাকলে সৈয়দপুর উপজেলা থেকে খেঁজুর ও তাল গাছ থেকে শীত মৌসুমে বছরে প্রায় কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলে একাধিক মহল এ প্রতিবেদককে জানান।
