তানোর প্রতিনিধি : জম্নের পর থেকেই দুই হাত ও দুই পা খোড়া তোকাজেবানের। একারণে শারিরিক প্রতিবন্ধী তিনি। এমন প্রকৃতির মানুষ হয়েও তোকাজেবান ঘরে বসে থাকেন নি। তিনি শিক্ষিত হয়ে দেশ ও দশের সেবা করতে হাটি হাটি পা পা করে এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাইকে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা থাকলে লক্ষ্যে পৌছানোর ক্ষেত্রে কোন কিছুই বাধা নয়।
উপজেলার মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তোকাজেবান। খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান সে। নুন আন্তে পান্তা ফুরায় তার পিতার সংসারে। এমন একটি পরিবারে শারিরীক প্রতিবন্ধী হিসাবে জম্ন নিয়েও নিজের পায়ে দাঁড়াতে তোকাজেবান পড়া-লেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পড়া-লেখা শেষ করে ভবিষ্যতে চাকুরী করার আশায় এত পরিশ্রম করেন তোকাজেবান। চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার আমনুরা ধিনগর গ্রামের আবদুস সালামের প্রথম মেয়ে তোকাজেবান। দ্বিতীয় মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীতে পড়া-লেখা করে।
এনিয়ে তোকাজেবানের পিতা আবদুস সালাম জানান, তার মেয়ে জন্মের পর থেকেই শারিরীক প্রতিবন্ধী হলেও লেখা-পড়ায় তার বেশ আগ্রহ দেখে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন তিনি। স্কুলে ভর্তির পর হতে তার ‘মা’ তাকে সঙ্গে নিয়ে আসা য্রায়া করতেন। প্রাইমারী স্কুলে তোকাজেবান ভাল ফলফল করে। এরপর আমনুরা বালিকা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। তোকাজেবানকে পড়াতে তার কষ্ট হলেও মেয়ের আগ্রহ দেখে তিনি কখনো পিচ পা হন নি। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় তার মেয়ে অশ গ্রহণ করেছে। আবদুস সালাম আরও বলেন, তার মেয়ে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত বিশেষয়ায়িত শিক্ষার সুযোগ পাইনি। আর দশজন শিক্ষার্থীর মতো পড়ালেখা করে প্রতিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
এনিয়ে স্কুল প্রধান শিক্ষক কুদরত আলী জানান, তোকাজেবান প্রতিবন্ধী বলে তার স্কুলে সব সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন তিনি। তিনি চান তোকাজেবান লেখা-পড়া শিখে অনেক বড় হোক। মুন্ডুমালা উচচ্ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তোকাজেবার স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তোকাজেবান লো বেঞ্চে বসে পরিক্ষা দিচ্ছেন। তার উচ্চতা ৩ ফিট ৪ ইঞ্চি।
এবিষয়ে কেন্দ্র সচিব কামেল মার্ডী বলেন, তোকাজেবান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে ওই কক্ষের শিক্ষকদেরকে দুয়েক মিনিট পরে খাতা নিতে বলা হয়েছে। তোকাজেবান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার লেখাটা একটু ধীরগতি।