মো.সুজন রানা : ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁডড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে’ এই কবিতাটি বইয়ে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। পাঠ্যপুস্তকের কবিতা পড়েই এখনকার শিক্ষার্থীরা বাবুই শিল্পের অলৌকিক কথা জানতে পারছে। এখন আর চোখে পরেনা বাবুই পাখি ও তার নিজের তৈরী দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য। হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। বাবুই পাখির বুননো শক্ত বাসাটি প্রবল ঝড়েও পরে যেতনা। একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সারি সারি উঁচু তালগাছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত। এখন তা আর সচরাচর চোখে পরেনা। কালের বিবর্তনে আমরা আজ হারাতে বসেছি বাবুই পাখি ও তার বাসা। যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আরও ফুটিয়ে তুলত। বাবুই পখি এক মৌসুমে ছয়ট বাসা তৈরি করতে পারে। ক্ষেতের ধান পাকার সময় বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার পরপরই বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য স্ত্রী বাবুই ক্ষেত থেকে দুধ ধান সংগ্রহ করে। বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসছে প্রকৃতির অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার অপরূপ শিল্পসম্মত বাসা এখন আর চোখে পরেনা। কালের আবর্তনে হাড়িয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতির অপরূপ শিল্প বাবুই পাখির বাসা।