শ্যামলবাংলা ডেস্ক : নির্দলীয় সরকারের প্রশ্নে কোনো ছাড় না দেয়ার কথা বলে আসলেও এবার ‘বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে বসতে রাজি’ বলে জানিয়েছেন দলের মুখপাত্র ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ১৬ নভেম্বর শনিবার প্রধান দুই দলের সংলাপে অনিশ্চয়তার মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ওই কথা বলেন। এসময় তিনি জানান, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তার দলের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। তবে সেই আলোচনা হতে হবে কেবল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে, অন্য কোনো বিষয়ে নয়। এসময় তিনি বলেন, আমি বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমোদন নিয়ে বলছি, সঙ্কট সমাধানে আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। সরকারকে বলব, আর সময় নষ্ট করবেন না। মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে সংলাপে বসার উদ্যোগ নিন।
উল্লেখ্য, এর আগে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি আলোচনার কথা বললেও নিজেদের অবস্থানে ছাড় না দেয়ার কথা বলে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোন আলাপেও খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকারের দাবি মানার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সভায় এমনকি বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আলোচনা সভায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন নির্দলীয় সরকার দাবির আন্দোলনে কোনো আপস না করার কথা বলেছিলেন। তার দু’দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়ালের ঢাকায় আসার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসক্লাবের আলোচনা অনুষ্ঠানে ফখরুল ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার নিয়ে সংলাপের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অপরদিকে, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংসদে অথবা সংসদের বাইরে আলোচনার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন- অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ আওয়ামী লীগের নেতারা।
দুই প্রধান দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে সমঝোতার জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহলের আহ্বানের মধ্যে গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দেন এবং তাতে বিএনপিকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। এরপর আলোচনা আর না এগোনোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত সর্বদলীয় সরকার গঠনের কাজ শুরু করেন। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলও টানা হরতালের কর্মসূচি দিতে থাকে। সবশেষে বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুলের ‘বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে বসতে রাজি’ তথ্যের প্রেক্ষিতে চলমান সংকট নিরসনে সম্ভাবনার ঝলক দেখা দিয়েছে।
