এস. গুলবাগী, বগুড়া : শত বৎসর পুর্বে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সোনার তরী কবিতায় তার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জীবন দর্শনে গ্রামবাংলার যে বাহিৃক চিত্র বর্ননা করেছেন মানব হৃদয়ের পরেতে পরেতে তা চির দৃশ্যমান হয়ে ভেসে বেড়ায় আজও। তার কল্পনার সেই ছোট্ট সোনার তরীটি মহাকালের অতল গহ্বরে তলিয়ে গেলেও সোনার ধানের মাঠ আজও হেসে ওঠে গ্রামবাংলায়,বাংলার আনাচে কারাছে। আসলে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর সোনার তরী বা সোনার ধান দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন এ নিয়ে কবি,লেখক,সাহিত্যিক ও দর্শন জগতের দর্শকেরা কতই যে চুলচেরা বিশ্লেষন করেছেন তার ইয়াত্ত নেই। তদুপরি যখন সোনার ধানে ভরা মাঠের দিকে দৃষ্টি পড়ে,অথবা কৃষকেরা যখন বুকে একরাশ হাসি নিয়ে তার সোনার ধানের ভাঁড়া কাঁধে নিয়ে উঠানের দিকে পা বাড়ায় প্রকৃতিও তখন অনাবিল আনন্দে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে সেই অপুর্ব বুক ভরা হাসির নৈস্বর্গিক দৃশ্য। মদন মোহন তর্কালংকারের সেই ‘বার মাস সাত বার, আসে যায় বার বার, শেলকের শিকল ধরে ‘রাশি রাশি ভাঁড়া ভাঁড়া ধান কাটা হলো সাড়া, এমন দৃশ্য ঘুরে আসে বাংলার কৃষকের জীবন ধর্মে। বিশ্বজগতের বার্ষিক গতির প্রবাহমান স্রোতে ক্যামেরায় ধরা পড়ে আবারও সে সোনার ধানের আঁটি-ভাঁড়ার দৃশ্য। সাহিত্যের পাতার সেকেলে সেই গোলা ভরা ধান আর গোয়াল ভরা গরু আজ আর নেই, নেই কার্তিক মাসের সেই ভয়াল আকাল (অভাব)। গম,ভুট্টা আর হরেক রকমের ফসলের সাথে পাললা দিয়ে ধান টিকে থাকলেও গোয়াল ভরা গরুর স্থান দখল করে নিয়েছে কলের লাঙ্গল। পুকুর ভরা কৈ-মাগুর, শোল-বোয়ালের স্থান দখল করে নিয়েছে সিলভারকাপ, হাঙ্গরি আর পাঙ্গাস মাছে। শিশু সাহিত্যের ছোট গল্প ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল প্রবাদটি সারা বাংলায় ছড়িয়ে গেলেও খাল-নদীর সীমানা পেরিয়ে সোনার ধানে মাঠ ভরে যায় বগুড়াসহ দেশের উত্তরাঞ্চল কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বগুড়ায় এবার আশাতিরিক্ত ফলনে সাধারন মানুষের মনে প্রশান্তি দেখা দিয়েছে। সরকারী-বেসরকারী তথা কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায় বগুড়াসহ সাড়াদেশে কৃষিতে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করবে দেশ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।