বৃহস্পতিবার , ৭ নভেম্বর ২০১৩ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

নির্বাচনী হাওয়া : মৌলভীবাজারের ৪ টি আসনেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জোট-মহাজোটের মধ্যে

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
নভেম্বর ৭, ২০১৩ ১:৪১ অপরাহ্ণ

Electionমো: খালেদ পারভেজ বখশ, মৌলভীবাজার : বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন। এ নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা ব্যস্ত রয়েছেন কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে লবিংয়ের মাধ্যমে মনোনয়ন ছিনিয়ে আনতে। বিগত পৌণে ৫ বছর মৌলভীবাজারের সরকার দলীয় এমপিরা উন্নয়নের চেয়ে দশম জাতীয় সংসদ পুন:নির্বাচিত হওয়ার কৌশল ও ব্যক্তিগত উন্নয়ন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। এছাড়া প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যেও কোন্দল চরমে। বিশেষ করে মৌলভীবাজারের ৪টি আসনের মধ্যে ২, ৩ ও ৪, ওই ৩টি আসনে অর্ন্তদ্বন্দ্ব, সংঘাত-সংঘর্ষ, বহিস্কার-অবাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়তই। অপরদিকে জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেও রয়েছে দুটি গ্রুপ। তেমনি বিএনপিতেও রয়েছে দুটি গ্রুপ। জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের প্রতিটিতেই প্রত্যেক দল থেকে ততোধিক নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক গণসংযোগ ও কেন্দ্রে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

Shamol Bangla Ads

মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ি) : বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও বড়লেখা পৌরসভা এবং জুড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসন। এ পর্যন্ত এ আসনে আওয়ামী লীগ ৫ বার, বিএনপি ২ বার এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ২ বার বিজয়ী হন। বর্তমানে এ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে সামান্য অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও প্রকাশ্যে খুব একটা লক্ষ্যণীয় নয়। ২ বারের নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য মো. সাহাব উদ্দিন এলাকায় চোখে পড়ার মতো খুব একটা উন্নয়ন না করলেও তৃণমূল পর্যায়ে সুজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, আটাব সভাপতি এমএ মোহাইমিন সালেহ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় নানাভাবে ব্যাপক গণসংযোগ এবং কেন্দ্রে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সে লক্ষ্যে তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে টিএন খানম একাডেমী ডিগ্রী কলেজ, আব্দুল মুছব্বির ইবতেদায়ি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও প্রতিষ্ঠান ‘প্রশান্তি ইউকে’ চেয়ারম্যান হিসেবে জুড়ীতে একটি মাতৃসদন নির্মাণসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।
অপরপক্ষে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ৪ জন প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন। এ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরিণ কোন্দল চরম পর্যায়ে রয়েছে। ১৮ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী। তিনি বড়লেখা জুড়ী এলাকায় ঘন ঘন সভা-সমাবেশ, মিটিং, সামাজিক কর্মকান্ডসহ গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এখানে বিএনপির অন্য প্রার্থী হচ্ছেন ঢাকার জালালাবাদ এ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকার মৌলভীবাজার জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক অহিদাবাদ চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু। জাতীয় পার্টি থেকে ২০০৭ সালের বিএনপিতে যোগদানকারী মুজিবুর রাজা চৌধুরী দীর্ঘদিন থেকে জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন র্ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক কর্মকান্ডে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া অন্য প্রার্থী হচ্ছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তি প্রবাসী দারাদ আহমদ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও ছাত্রশিবির বায়তুলমাল সম্পাদক আমিনুর রহমান ১৮ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির আহমেদ রিয়াজ, জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান বাবুল, বড়লেখা উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি নুর উদ্দিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর নাম শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায়। তবে ১৮ দলীয় জোট তত্বাবধায়ক প্রশ্নে নির্বাচনে না এলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে।

মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া-কমলগঞ্জ) : এ আসনটি কুলাউড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও কুলাউড়া পৌরসভা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগ ৩ বার, জাতীয়পার্টি ৩ বার, বিএনপি ১ বার, মুসলিম লীগ ১ বার, স্বতন্ত্র ১ বার নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য নবাব আলী আব্বাস খান নির্বাচিত হন। জাতীয় পার্টি এবারও যদি মহাজোট থেকে নির্বাচন করে তবে নবাব আলী আব্বাস খানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ আসনে ডাকসুর সাবেক ভিপি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মো. মনসুর আহমদ ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান শামীম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সুলতান মো. মনসুর আহমদ নবম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনোত্তর মাঠে রয়েছেন তিনি। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও শোনা যাচ্ছে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মৌলভীবাজারের একাধিক আসনে নির্বাচন করবেন। তবে পৌণে ৫ বছর সাধারণ জনগণ ও ভোটারদের সঙ্গে সুলতান মো. মনসুর আহমদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকায় সাধারণ ভোটার ও সচেতন মহলের কাছে তাঁর যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এ ছাড়া সুলতান মো. মনসুর আহমদ আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। এ আসনে মনসুর আহমদ আ’লীগের মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
১৮ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন লাভের জন্য সাবেক সংসদ সদস্য এমএম শাহীন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট আবেদ রাজা ও সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমএম শাহীন ও এ্যাডভোকেট আবেদ রাজা গত নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে তাদের ভিত গভীরে। কিন্তু এ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরিণ কোন্দল খুব বেশি। স্থানীয়ভাবে নেতাকর্মীরা এমএম শাহীনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেগম খালেদা রব্বানীর পক্ষে। অপর পক্ষে রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমানের নেতৃত্বে এ্যাডভোকেট আবেদ রাজা গ্রুপ। অপরদিকে জোটগত নির্বাচনের প্রশ্নে সিলেট জামায়াতের সাবেক আমির ডা. শফিকুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এমএম শাহীন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর জোট সরকারের সময় সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেন। তবে সাধারণ জনগণ ও ভোটারের সঙ্গে এমএম শাহীনের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকায় তিনি এলাকায় বেশ জনপ্রিয় রয়েছেন। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় মোটামুটি ভাল অবস্থান থাকলেও দলীয় কোন্দল নিরসন করা না গেলে আবারও মহাজোট প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

Shamol Bangla Ads

মৌলভীবাজার-৩ (সদর) : এ আসনে বিএনপি থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের মধ্যে অন্যতম সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক তারেক জিয়ার একান্ত সহযোগী মুহিদুর রহমান ও সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য বেগম খালেদা রব্বানী।  রহিম শহীদ সিআইপিও মনোনয়ন পাওয়ার জন্যই তার নিবার্চনী আসনে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ ও কামাল আহমদের নাম জোরেসোরেই শোনা যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) : এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা হাজী মুজিবুর রহমান মুজিব।  অনেকের মুখে মুখে সাবেক এমপি  বিএনপির প্রবীণ নেতা আহাদ মিয়ার নামও শোনা যাচ্ছে।  তবে শ্রীমঙ্গল বরুনা এলাকার বিএনপির সাবেক এমপি মরহুম শফিকুর রহমানের ভাতিজা নুরে আলম হামিদী ১৮ দলীয় ঐক্যজোটের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় এলাকায় সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রার্থী বর্তমান জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ। এলাকায় তাঁর আমলে বেশ উন্নয়ন হয়েছে। চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা হওয়াতে চা শ্রমিকদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে নৌকা প্রতীকের পক্ষে। সে হিসেবে আসনটি নৌকার আসন হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের পক্ষে আর কারও নাম এখনও শোনা না গেলেও লোকমুখে গুঞ্জন রয়েছে নতুন নাম আসতে পারে।  আবার কারও কারও মুখে শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেবের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টির কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!