স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুরে বিএনপিতে চলে আসা দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্বে বিবদমান দু’গ্র“পের সমঝোতায় ঐক্যের সুবাতাস বইতে না বইতেই সেই সম্ভাবনায় দেখা দিয়েছে ফাটল। ফের দু’পক্ষ পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ নিয়ে পরিস্থিতি অনেকটা ঘোলাটে আকার ধারণ করেছে। ফলে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস যৌথভাবে পালনের সম্ভাবনা ভেস্তে গেছে। সংঘাতময় পরিস্থিতির আশংকায় বাতিল করা হয়েছে সেই কর্মসূচি। এ নিয়ে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ফের হতাশায় পড়েছে।
জানা যায়, শেরপুর জেলা বিএনপিতে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় দ্বন্দ্বের জের ধরে অভ্যন্তরিণ কোন্দল ও গ্র“পিং চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। ওই দ্বন্দ্বের কারণে হামলা-মামলা আর পুলিশী বাধায় বিরোধী দল ঘোষিত প্রায় কর্মসূচিগুলোতেই মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি। ওই অবস্থায় সরকার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলন চাঙ্গা করতে এবং দলকে সুসংগঠিত করতে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মরহুম সাইফুল ইসলাম কালামের বাসায় উভয় গ্র“পের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক বৈঠকে ঐক্যমত্যে পৌছান। সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তি দলীয় সকল কর্মসূচি দলীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে পালন করবেন। কিন্তু ওই ঐক্যমতে পৌছার একদিন পরই মাহমুদুল হক রুবেল তার গ্র“পের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। তাদের একটি অংশ রুবেলকে পরিস্কার জানিয়ে দেন, দলের ‘বিতর্কিত নেতা’ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি (সাময়িক বহিস্কৃত) সাইফুল ইসলাম স্বপনকে বাদ দিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে হবে, অন্যথায় তারা তার (রুবেলের) সাথে নেই। পরে দলীয় নেতাদের চাপে বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত নেয় সাইফুল ইসলাম স্বপনকে বাদ দিয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করবে। এ খবর অপর গ্র“পের নেতারা জানার পর তারাও ঘোষনা দেয় পৃথক কর্মসূচি পালনের। তাই সমূহ সংঘাত এড়াতে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল দলীয় কার্যালয়ে পূর্ব ঘোষিত বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচী বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল দলীয় কোন্দলের কারণে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচী বাতিলের কথা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, শেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এড. ছাইফুল ইসলাম কালামের মৃত্যুর পর জেলা বিএনপিতে শুরু হয় নেতৃত্বের কোন্দল। ওই কোন্দলের জের ধরে দলীয় কেন্দ্রিয় কমূর্সচি পালনে দেখা দেয় নানা জটিলতা এবং অনেক সময় কেন্দ্রিয় কোন কর্মসূচী পালনে দ্বিধাবিভক্ত নেতা-কর্মীদের মাঠে দেখা যায়নি। ফলে শেরপুর বিএনপিতে গ্র“পিং ও কোন্দল চরম পর্যায়ে পৌছায়। শহরের রঘুনাথ বাজার জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়টি নেতা-কর্মীশূন্য হয়ে পড়ে। এরই এক পর্যায়ে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আশীষ ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল বিবদমান অপর গ্র“পের শীর্ষ নেতা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপনকে বহিস্কারের ঘোষণা দেয়। এর পাল্টা হিসেবে সাইফুল ইসলাম স্বপন গ্র“পের পক্ষ থেকে আব্দুর রাজ্জাক আশীষ ও মাহমুদুল হক রুবেলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এরপর নানা মেরুকরণের সূত্রে আন্দোলন আর নির্বাচনের প্রশ্নে সমঝোতায় পৌছতে কেন্দ্রীয়ভাবেও উদ্যোগ নেওয়া হয় দু’পক্ষকে নিয়ে। কিন্তু তারপরও বরফ গলেনি।