পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাও) সংবাদদাতা : জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের এক গাইনী চিকিৎসকের অবহেলার কারনে বিনা চিকিৎসায় অকাল মৃত্যুর শিকার হয়েছে এক প্রসূতি মাতা। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা শহরের আধুনিক ক্লিনিকে গাইনী কনসালটেন্ট ডা. নজরুল ইসলাম সহ অপরাপরদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানা যায় শহরের মিত্রবাটি গ্রামের সারোয়ার জাহান সাজু’র স্ত্রী নাজমা বেগম(৩৩) এর প্রসব বেদনা শুরু হলে সকাল ১০ টার দিকে পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়। পরে গাইনী কনসালটেন্ট ডা. নজরুল ইসলাম সহ কর্মরত আরজু, লাভলী বেগম ও পারভীন আকতার লেবার রুমের ৩ নং বেডে রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কোন সমস্যা নেই, সময় হলে যথাসময়ে বাচ্চা প্রসব হবে বলে কোনপ্রকার ব্যবস্থাপত্র না দিয়ে চলে যান। এভাবে সারাদিন প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকেন প্রসূতি নাজমা বেগম। সন্ধার পর ওয়ার্ডের কর্তব্যরতরা হাসপাতালে বাচ্চাপ্রসব সম্ভব নয় জানিয়ে স্থানীয় আধুনিক ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করেন। র্মমূর্ষু অবস্থায় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নাজমাকে স্থানীয় আধুনিক ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিকে ভর্তি করেও ডাক্তারের দেখা পায়নি তারা। গাইনী কনসালটেন্ট ডা. নজরূল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান, রোগী সম্পূর্ন ভাল আছে, আমি বোচাগঞ্জ উপজেলায় সিজার করতে এসেছি। সিজার করা হলে রাত ১০ টায় গিয়ে ওটা করে দেব। এভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে রোগীর অবস্থা খারাপের দিবে যেতে থাকে।
রাত ১০ টায় ডা. নজরুল ইসলাম ক্লিনিকে গিয়ে রোগী দেখে আরো সময় লাগবে বলে পাশ্ববর্তী রুমে গিয়ে বসেন। এর প্রায় ঘন্টাখানেক পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন প্রসূতি মা। মৃত্যূর খবর ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ লোকজন রাতেই ক্লিনিকে ডা. নজরুল সহ সংশি¬ষ্টদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে রাত ৩ টার দিকে মৃতের পরিবারের পক্ষ ক্লিনিক থেকে মৃতদেহ গ্রহন পূর্বক স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। ডাক্তারের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আব্দুল মজিদের বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি বলেন, মোবাইলে তো বলা যায়না আপনি আগামীকাল অফিসে আসেন আমি অফিসিয়ালী যা বলার বলব। তবে গাইনী কনসালটেন্ট ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আমি রোগী দেখে কোন সমস্যা পাইনি তাই অপেক্ষা করতে বলেছি,আমার কোন অবহেলা ছিলনা আর ক্লিনিকে নেয়ার পর ৩ ব্যাগ রক্ত যোগার করতে বলেছি, এর মধ্যেই মৃত্যুবরন করেছে।্