শ্যামলবাংলা ডেস্ক : সরকারের শেষ মেয়াদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা দ্বিতীয় দফা ৬০ ঘন্টা হরতালে প্রথম দিন বিচ্ছিন্ন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘাত-সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। কিছুটা ঢিলেঢালা বা আংশিক হরতালের পরও এ দিন চট্টগ্রাম, লালমনিরহাট ও নাটোর জেলায় ৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে পুলিশসহ দেড় শতাধিক মানুষ। অন্যদিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ আটক করেছে অন্তত: ১শ জনকে। খবর প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের।
চট্টগ্রাম : সোমবার সকালে নগরীর কালুরঘাট এলাকায় পিকেটারদের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে টেম্পো উল্টে মো. জাকির (৩০) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহত জাকির নগরীর দামপাড়া এক নম্বর গলির বাসিন্দা আলী হোসেনের ছেলে। তিনি কালুরঘাট সি অ্যান্ড এ গ্রুপের কমার্শিয়াল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া নগরীর চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানা এলাকায় পিকেটিংয়ের সময় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
লালমনিরহাট : জেলার পাটগ্রাম উপজেলার পৌর শহরের সোহাগপুরে ধরলা সেতু এলাকায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পৌর ছাত্রদল নেতা নাসির উদ্দিন (২২) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে পুলিশসহ অন্তত: ২৫ জন। নিহত নাসির স্থানীয় সোহাগপুর এলাকার মিন্টু মিয়ার ছেলে। একজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পৌর শহরে বিজিবি ও এপিবিএনের দুই প্লাটুন জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার সকাল ৯টার দিকে আওয়ামী লীগকর্মীরা মিছিল নিয়ে ধরলা সেতু পার হয়ে সোহাগপুর বাজারের দিকে যেতে চাইলে বিএনপি-জামায়াতকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশ এগিয়ে এলে হরতালকারীরা পুলিশের দিকেও ইটপাটকেল ছোড়ে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ নাসিরকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাটোর : সোমবার সকালে জেলার গুরুদাসপুরের নয়াবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পিকেটারদের ধাওয়া খেয়ে ট্রাক থেকে নামতে গিয়ে পড়ে ইছাহাক আলী (৩৫) নামের এক ধানকাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি সিরাজগঞ্জের দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের খইমুদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, সোমবার সকাল ৬টার দিকে ৩০-৪০ জন কৃষি শ্রমিককে নিয়ে একটি ট্রাক নাটোরের দিকে যাচ্ছিল। নয়াবাজার এলাকায় হরতাল সমর্থকরা ইটপাটকেল ছুড়ে ট্রাকটি থামানোর চষ্টো করে। ওই সময় চালক ট্রাকটি নিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার চেষ্টা করে এবং তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে পড়ে ইসাহাক গুরুতর আহত হন। পরে অন্য শ্রমিকরা ইছাহাককে উদ্ধার করে গুরুদাসপুর হাসপাতালে ভর্তি করলে কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়।
