স্টাফ রিপোর্টার : কাজ না করে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে টিআর প্রকল্পের প্রায় ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান ও ৭ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে দুনীর্তি দমন কমিশন। ৩ নবেম্বর রবিবার কমিশনের টাঙ্গাইলস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। পৃথক পৃথক মামলাগুলোর মধ্যে ইউপি চেয়াম্যানদের বিরুদ্ধে একটি করে হলেও প্রতিটিতেই আসামী করা হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যানকে। ওইসব মামলায় আসামীরা হচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদশা, কাংশা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ সরকার, ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম, নলকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, গৌরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ খোকা, ঝিনাইগাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন খান, হাতীবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিন ও মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শফি উদ্দিন।
এদিকে ৭ ইউপি ইউপি চেয়ানম্যানসহ ঝিনাইগাতীর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার খবরে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ওই মামলার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ইউপি চেয়ারম্যানগণ।
দুদকের মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১/১২ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের অধীনে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি (টিআর) প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইগাতী উপজেলায় ১শ’মে. টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওইসব টিআরের গম দ্বারা গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারের কথা থাকলেও উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানরা তা না করে ভূয়া প্রকল্প সাজিয়ে এবং ভূয়া মাষ্টার রোল দাখিল করে প্রকল্পের প্রায় পুরো বরাদ্দই আত্মসাত করেন। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল আলম বদলীর পর রেজাউল করিম তার স্থলাভিষিক্ত হলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম ভূয়া মাষ্টার রোলসহ সরেজমিনে তদন্তের জন্য মাঠে নামেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তা দুদকে প্রেরণ করেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে দুদকের টাঙ্গাঈল উপ-পরিচালক কয়েক দফায় তদন্ত শেষে দুুদক ওই ৭ ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে পৃথক ৭টি মামলা দায়ের করেন। আর ওইসব মামলায় প্রত্যক্ষ যোগসাজসের অভিযোগে আসামী করা হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যানকে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের যোগসাজসে ৭ ইউপি চেয়ারম্যান তাদের অনূকুলে বরাদ্দকৃত ১০০.২০৯ মে. টন গমের মধ্যে ৬৭.২০৯ মে. টন গমের কোন কাজ না করে ভূয়া কাজ দেখিয়ে সরকারী খাদ্যগুদাম হতে গম উত্তোলনপূর্বক তা কালোবাজারে বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ সরকারী মূল্যের ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৩১ টাকা ৫০ পয়সা আত্মসাত করেছেন। এর মধ্যে গৌরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ খোকা ৪ টি ভূয়া প্রকল্পের অনূকুলে ৬ মে. টন গম কালোবাজারে বিক্রি করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৭২ টাকা, ঝিনাইগাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন খান ৫ টি ভূয়া প্রকল্পের অনূকুলে ১০ মে. টন গম কালোবাজারে বিক্রি করে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ১শ ২০ টাকা, হাতীবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিন ৩ টি ভূয়া প্রকল্পের অনূকুলে ৬.২০৯ মে. টন গম কালোবাজারে বিক্রি করে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ২শ ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা, মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শফি উদ্দিন ৩ টি ভূয়া প্রকল্পের অনূকুলে ১০ মে. টন গম কালোবাজারে বিক্রি করে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ১শ ২০ টাকা আত্মসাত করেছেন।