এম. এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের ২ নং রেলওয়ে ঘুমটি থেকে দক্ষিণে বানিয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় রেললাইনের উভয়পাশে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে করে ওই এলাকায় ট্রেন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে রেললাইনের উভয়পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও কিছুদিন পর আবারও সেসব গড়ে উঠছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের (বিআর) আইন অনুযায়ী রেললাইনের উভয়পাশে ২০ ফুট এলাকা বিপজ্জনক ও সংরক্ষিত এলাকা। কিন্ত বাণিজ্যিক প্রধান সৈয়দপুর শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের ২ নং রেলওয়ে ঘুমটি থেকে দক্ষিণে বানিয়াপাড়া পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রেলওয়ে লাইনের উভয়পাশে রেলওয়ে লাইন ঘেঁষে অসংখ্য কাঁচা-পাকা বিভিন্ন ধরণের অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। ওইসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে হোটেল-রেস্তোঁরা, বোডিং, কামার, স্বর্ণকারের দোকান, মাংস, তৈজসপত্র দোকান, পুরাতন কাপড়ের দোকান, ট্রাঙ্ক ও বালতির কারখানা, কাগজের বক্স তৈরির দোকান, টেইলার্স দোকান, জেনারেটর রুম, আসবাবপত্র তৈরির কারখানা প্রভৃতি।
রেললাইন ঘেঁষে উল্লিখিত দোকানপাট গড়ে উঠায় ক্রেতাসাধারণের মুলত রেললাইন ব্যবহার করে এসে ওইসব দোকানগুলোতে কেনাকাটা করছে। শুধু তাই নয়, ওইসব দোকানে ব্যবহৃত পানিসহ সকল বর্জ্য সরাসরি রেললাইনে নিয়ে ফেলছে দোকান মালিকরা। বিশেষ করে হোটেল-রেস্তোঁরা ও কামার দোকানের পানি প্রকাশ্যে এনে রেললাইনে ঢেলে দেয়া হচ্ছে। এতে করে রেললাইন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও রেললাইনের উপর কিছু ভ্রাম্যমান ফেরিওয়ালা বসে প্রতিদিন। তারা রেললাইনের উপর বসে বেচাবিক্রির কাজ করছে। আর এতে করে সারাক্ষণ রেললাইনের উপর মানুষের সরব উপস্থিতি থাকছে। ফলে প্রায়ই ট্রেনে লোকজন কাটা পড়ছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, রেলওয়ে শহর সৈয়দপুর থেকে রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর রাজশাহী ও খুলনাগামী আন্ত:নগর ও লোকাল মিলে ৭টি ট্রেন ১৪ বার চলাচল করে। অপরদিকে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা এখানে অবস্থিত। আর তাই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মেরামতের জন্য রেলওয়ে র্যাক (ওয়াগন) ওই রেললাইন দিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় নিয়ে আসা হয়। রেলাইনের উভয়পাশে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠায় স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই অবৈধ স্থাপনার কারণে ট্রেন চালকরা সামনে ঠিকভাবে দেখতে পান না। এর ফলে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।