সাপাহার (নওগাঁ) সংবাদদাতা : দেশের ভৌগলিক মানচিত্রের কারনে নওগাঁ জেলার পত্নীতলার মাদকে সীমাহীন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে সাপাহার উপজেলার যুবসমাজসহ অন্যান্য শ্রেণী পেশার মানুষ। সাপাহার উপজেলা প্রশাসনসহ থানা প্রশাসন নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে সাপাহারকে কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনতে পারলেও পত্নীতলা উপজেলার একটি অংশের কারনে তা বার বার ভেস্তে যাচ্ছে। এক সময় সাপাহারে মাদকের নেশায় যুবসমাজের প্রায় ৮০ শতাংশ জড়িয়ে পড়ে সাপাহারকে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছিল। বর্তমানে প্রশাসনের তৎপরতায় নেশার ছড়াছড়ি কিছুটা কমলেও যুবসমাজের ওই অংশসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এখন পত্নীতলা উপজেলার ওই অংশে গিয়ে নির্বিঘ্নে নেশা পান করে ফিরে পুরো সাপাহারকে দূষিত করে ফেলছে।
জানা যায়, সাপাহার উপজেলা সদর হতে উত্তরে মাত্র ২শ ৫০ মিটার পরেই পত্নীতলা উপজেলার অংশ শুরু হয়ে উপজেলাকে পাশ কাটিয়ে তা সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত্ব হয়ে পড়েছে। সাপাহার উপজেলার নিকটবর্তী হয়েও ভিন্ন উপজেলা হওয়ায় সাপাহার প্রশাসন সেখানে যেতে পারছেনা। আবার পত্নীতলা উপজেলা সদর হতে প্রায় ২০/২৫ কি.মি দুরত্ব ও দুর্গম পথ হওয়ায় সেখানকার প্রশাসনও সময় মত ওই স্থানে যেতে পারছেনা। ফলে বছরের পুরো সময় ওই অংশের ঘুড়িয়াপাড়া, আলপাকা, ঘোলা দিঘী, উত্তর রামপুরসহ বেশ কিছু এলাকা পরিণত হয়েছে মাদক ব্যবস্যার স্বর্গ রাজ্যে। ওই এলাকার অপরাধীরা ওইসব মরণ নেশা অতিসহজে সীমান্তের ওপার ভারত হতে আমদানি করছে। সাপাহার হতে অতি সন্নিকটে হওয়ায় প্রতিদিন সকাল বিকেলে এখানকার মাদকসেবীরা বীরদর্পে মোটর সাইকেল হাঁকিয়ে সেখানে গিয়ে মরণ নেশা ফেন্সিডিল, হিরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশা পান করে ফিরে আসছে। সেখানে মাদক সেবনের তালিকায় সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, ছাত্র সহ অনেক পেশাজীবির মানুষ রয়েছে বলে জানা গেছে। বিকেল হলেই পত্নীতলার ঘুড়িয়াপাড়া হতে আগ্রাদ্বিগুন রাস্তায় উত্তর রামপুর মোড় পর্যন্ত সারি সারি মাদক বিক্রেতারা দাঁড়িয়ে রয়েছে খদ্দের ধরার আসায়। যে কোন খদ্দের গেলেই রাস্তার দু’পার্শ্বে ঝোপ জঙ্গল হতে লুকিয়ে রাখা মাদক দ্রব্য এনে তুলে দিচ্ছে খদ্দেরের হাতে। ওই রাস্তায় ভাল কোন লোক কোন কারনে মোটর সাইকেল দাঁড় করলেই মাদক ব্যাবসায়ীরা দ্রুত তার কাছে ছুটে এসে লাগবে কোন মাল বলে জিজ্ঞেস করছে অপ্রস্তত হয়ে পড়ছে পথচারী। এছাড়া কখনও কোন কারনে রাস্তায় মাদক ব্যবসায়ীদের দেখা না মিললে মোটর সাইকেলের হর্ণ বাজালেই ছুটে আসছে মাদক হাতে মাদক ব্যাবসায়ী। ওই এলাকার চতুর ব্যাবসায়ীগন তাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদেরকে দিয়ে সাধারণত এই ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছে। ইতোপূর্বে নওগাঁ মাদক নিয়ন্ত্রন ও সাপাহার উপজেলা প্রশাসন এর যৌথ ট্রাসফোর্স অভিযানে বেশ কয়েক বার ওই স্পট হতে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লোকজন অসংখ্য ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে। সাপাহার ও পত্নীতলার ওই এলাকাবাসী তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ্যভাবে সুস্থ্য সমাজে বসবাসসহ মাদকের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে পত্নীতলার নির্মইল ও শিয়াড়া ইউনিয়নের কিছু অংশ সাপাহার উপজেলায় অর্ন্তভূক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।