জিয়াউর রহমান জিয়া, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) : ভারতে ৬ মাস বন্দীজীবন কাটিয়ে মা-বাবার কোলে ফিরল ৫ম শ্রেণীতে পড়–য়া শান্তি খাতুন (১১)। ২৫ অক্টোবর শুক্রবার সকালে রৌমারী উপজেলার চর নতুনবন্দর সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ’র মাঝে এক পতাকা বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে শান্তি খাতুনকে ফেরত দেয় বিএসএফ।
জানা যায়, ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভারতীয় এক যুবক শান্তি খাতুনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর বিএসএফ’র হাতে ধরা পড়ে। এরপর দীর্ঘ ৬ মাস শান্তি খাতুন ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরি জেলার সিংরীবাড়ি শিশু আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বন্দী জীবন কাটায়।
রৌমারী সীমান্তের মেইন পিলার নং ১০৬৫ এর কাছে বিজিবি-বিএসএফ এর মাঝে পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি-৩৫ ব্যাটালিয়নের বাংলাবাজার কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার মনির হোসেন ও রৌমারী থানার এএসআই আলাউদ্দিন। ভারতের পক্ষে বিএসএফ-৫৭ ব্যাটালিয়নের এসি নারায়ন চন্দ্র ও মাইনকার চর থানার এসআই আব্দুল খালেক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন শিশুটির বাবা, মা, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবি সমিতির প্রতিনিধি আরিফুল হক রোকন ও সাংবাদিকরা।
রৌমারী উপজেলার সীমান্তঘেষা বারবান্দা গ্রামের দিনমজুর ফজল হকের একমাত্র সন্তান শান্তি খাতুন। সে বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করত। ভারতীয় যুবক অপহরন করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে অসহায় বাবা-মা একমাত্র সন্তানকে ফেরত পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন-নিবেদনের দীর্ঘ ৬ মাস পর অপহৃত শিশু শান্তির দেশের মাটি তথা বাবা-মার কাছে ফেরতের পথ সুগম হয়।
শিশু শান্তি খাতুন ভারতের আশ্রয়ন কেন্দ্রে বন্দী সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নজরে আসে। শিশুটিকে ফেরত আনার ব্যাপারে এডভোকেট সালমা আলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তৎপরতার চালান। তাদের তৎপরতার কারনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একমাত্র সন্তানের শোকে প্রায় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া বাবা ফজল হক ও মা হুনুফা বেগম আদরের মেয়েকে ফেরত পেয়ে বুকে আগলে ধরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোখলেছুর রহমান জানান, পতাকা বৈঠকের পর শিশুটিকে ফেরত এনে তার বাবা-মার কোলে তুলে দেওয়া হয় অপহৃত শিশু শান্তি খাতুনকে।
