ইয়ানুর রহমান : এক মাসের টানা বর্ষণে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষীদের মাথায় হাত উঠেছে। টানা বর্ষণে গদখালীর অন্তত ৫০ লাখ টাকার ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ফুল েেতও পচন ধরেছে। পড়ে গেছে ফুলের দাম। সবমিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের ফুল চাষীরা।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী এলাকার বিস্তির্ণঅঞ্চল জুড়ে ফুল চাষ হয়ে থাকে। এই অঞ্চলের কৃষকরা ধানের বদলে তাদের জমিতে ফুল চাষ করে থাকেন। বছরে অর্ধশত কোটি টাকার ফুল উৎপাদন করে তারা সারা দেশে সরবরাহ করেন। ফুল চাষ লাভজনক পেশায় পরিণত হওয়ায় গত কয়েক দশক ধরেই এই এলাকার কৃষকরা এই পেশার উপর নির্ভরশীল।
তবে গত এক মাসের টানা বর্ষণে বড় ধরণের তির সম্মুখীন হয়েছেন ফুল চাষীরা। অব্যাহত বৃষ্টির প্রভাবে চাষীদের েেতর প্রায় ৫০ লাখ টাকার ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। পানি জমে অনেক ফুল েেত পচনও ধরেছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, গত এক মাসে ৪১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে যশোরাঞ্চে। শুধুমাত্র রোববার ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
গদখালী ফুল চাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, গদখালী অঞ্চলের কৃষ্ণচন্দ্রপুর ও কামার আলী গ্রামে রজনীগন্ধা ও গাডিওলাস এবং পানিসারা, হাড়িয়া, চাঁদপুর ও নারাঙ্গালী গ্রামে সবচেয়ে বেশি গাঁদা ফুলের চাষ হয়ে থাকে। অব্যাহত বৃষ্টিতে এই গ্রামগুলোর অধিকাংশ েেতই পানি জমে গেছে। পানিতে প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমির রজনীগন্ধা ও গাডিওলাস এবং দেড়শ’ হেক্টর জমির গাঁদা ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দু’শতাধিক কৃষক মারাত্মক তির শিকার হয়েছেন। ফুলই নষ্ট হয়েছে ৫০ লাখ টাকার। এছাড়া েেতর তি তো রয়েছেই।
একইসাথে, বৃষ্টিপাতের কারণে ফুলের বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বৃষ্টিপাতে পরিবহন সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় ফুলের দাম পড়ে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে রজনীগন্ধা ও গাডিওলাস ফুলের প্রতি আঁটি (একশ’ পিচ) দেড়শ’ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা এক-তৃতীয়াংশ পঞ্চাশ টাকায় নেমে এসেছে। একইভাবে গাঁদা ফুলের হাজার প্রতি অর্ধেকে নেমে এসে দেড়শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিগ্রস্ত কৃষক পানিসারা গ্রামের আজিজুর সরদার জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছেন। এর অর্ধেক জমির ফুল ও গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। একই গ্রামের হায়দার আলী ২ বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা চাষ করেছিলেন। তার অবস্থাও সঙ্গীন।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক হেমায়েত হোসেন জানান, ঝিকরগাছার গদখালিতে পুতি সিজনে ১৫শ’ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়ে থাকে। টানা বৃষ্টিতে ফুলের েেত ছত্রাকের সংক্রমন হয়েছে। বৃষ্টির পর রোদ উঠলে গাঁদা ফুলের েেত ছত্রাকনাশক রিডোমিন গোল্ড বা টিল্ট পরিমিত মাত্রায় ছিটানোর জন্য তিনি কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
