ওবায়দুল ইসরাম রবি, রাজশাহী : প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে রাকিবুল ইসলাম শিমুল (২৮) নামে এক লম্পট যুবক। ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশনে ওই ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে এবং গুরুতর অবস্থায় রাবি ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় নিয়মিত মামলাসহ আটক যুবককে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যদিকে হাতুড়িপেটায় রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে রাবি ছাত্রী দু’দিন যাবত হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
জানা যায়, সম্প্রতি চারঘাট উপজেলার পান্নাপাড়া গ্রামের মেয়ে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী স্থানীয় তেঁথুলিয়া বাজারে থাকা এক স্টুডিওতে ছবি তুলতে গেলে স্টুডিও মালিক ও স্থানীয় বাওসা গ্রামের হায়দার আলীর এসএসসি পাস ছেলে রাকিবুল ইসলাম শিমুল তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার কথায় রাজি না হলে একদিন রাতে শিমুল মেয়েটির বাড়িতে চলে যায়। পরিবারের লোকজন দেখে ফেলে তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। মঙ্গলবার সকালে মেয়েটি তার চাচাতো বোনদের সঙ্গে বাঘা উপজেলার সাহাপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিল। তারা উপজেলার আড়ানী স্টেশনে পৌঁছলে শিমুল তার এক বন্ধুকে সঙ্গে করে হাতুড়ি নিয়ে মেয়েটির ওপরে হামলা চালায়। আড়ানী রেলস্টেশনের কুলি সরদার হোসেন আলী বলেন, ট্রেন চলে যাওয়ার পরে তিনি পেছনে তাকিয়ে দেখেন একটি ছেলে মেয়েটির মাথায় উপর্যুপরি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করছে দেখে তারা দৌড়ে যান। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে চারিদিক থেকে লোকজন গিয়ে তাকে ধরে ফেলে। তবে তার বন্ধুটি পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক আকরাম হোসেনের কাছে নেয়া হলে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত তাকে রাজশাহী অথবা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে বলেন।
যোগাযোগ করা হলে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বেনজির আহাম্মেদ বলেন, মেয়েটির মাথায় গভীর ক্ষত হয়েছে। বমি করেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় লোকজন শিমুলকে ধরে প্রথমে আড়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় দু’পক্ষের লোকজন চেয়ারম্যানের কাছে যায়। চেয়ারম্যান বলেন, তার কাছে যাওয়ার পরে দুই পক্ষের লোকজন প্রথম মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে যখন জানা গেল মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তখন মিমাংসার প্রস্তাব নাকচ করে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। থানায় আটক রাকিবুল ইসলাম ওরফে শিমুল বলেন, তার সঙ্গে মেয়েটির আগে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন আর তার কথা শোনে না। এ জন্য সে তার ওপরে হামলা করেছে।
বাঘা থানার এসআই আসলাম হোসেন বলেন, মেয়ের চাচা জামাল হোসেন বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং মারপিট করে জখমের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
