ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী : পবার হরিপুরে পদ্মার ভাঙন যেন সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই পদ্মার গর্ভে বিলিন হচ্ছে সোনাইকান্দি এলাকা, নবগঙ্গা, ৫নং আই বাঁধ, বুলনপুর ৩ নং আই বাঁধ এলাকা। রাজশাহী পাউবো’র তথ্যমতে এ ক’দিনে প্রায় ৫শ’ ফুট পাড় ভেঙ্গে বাধের দিকে এগিয়ে এসেছে। পবার হরিপুরে পদ্মার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছে।
ঘর-বাড়ি ও ফসলী জমি হারানোর ভয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধও। পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পবার বেড়পাড়া থেকে সোনাইকান্দি হয়ে নবগঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন চলছে। প্রায় এক মাসের ওপরে চলছে এ ভাঙন। সম্প্রতি পদ্মার পানির স্রোত বেড়ে যাওয়ায় আবারো বেড়েছে ভাঙনের পরিধি।
এরই মধ্যে ভাঙনে ওই এলাকার কয়েকশ বিঘা জমির আবাদ-ফসল ও বিভিন্ন ফলের বাগান এবং বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরো কয়েক দিন এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে এবং আই বাঁধ দুইটি রক্ষা করা না গেলে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধও হুমকিতে পড়বে। ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙন চলে আসলেও তা রোধে কোন উদ্যোগ নেইনি কর্তৃপক্ষ। ফলে ভিটে-মাটি হারিয়েছেন অনেকেই। আতংকের মাঝে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এই জনপদের নি:স্ব মানুষেরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পাশ্ববর্তী বাঁধ ও উঁচু জায়গায়। পর্যাপ্ত সহায়তা না থাকায় এক রকম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।
এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ ও হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ্জাকুল ইসলাম, হরিপুর ইউপি সচিব সাইদল ইসলাম, সদস্য লাল মোহাম্মাদ প্রমুখ। প্রতিদিন ভাঙন দেখতে আসছেন শত শত নারী-পুরুষ। বিকেলে পাড়জুড়ে থাকছে তাদের অবস্থান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন বলেন, নবগঙ্গা থেকে বেড়পাড়া পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছেন। স্থায়ী প্রতিরক্ষমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও নকশা তৈরী করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।