কৃষকদের মাথায় হাত
স্টাফ রিপোর্টার : কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে শেরপুরের বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত বেসরকারী তাজ কোল্ড ষ্টোরেজে কৃষকদের রক্ষিত হাজার হাজার বস্তা আলু পঁচে গেছে। একে তো আলুর দাম কম, তার উপর আবার আলু পঁেচ যাওয়ায় শত শত কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। অনেকেই ওই পঁচা আলু কোল্ড ষ্টোরেজ থেকে বের করার শক্তি পাচ্ছে না। ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ওই নাজুক অবস্থা আর কৃষকের আহাজারি।
জানা যায়, ১ লাখ ২০ হাজার বস্তা ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন তাজ কোল্ড ষ্টোরেজে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত আরও ২০ হাজার বস্তা আলু রাখা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ খরচ বাচানোর জন্য ঈদের সময় সুইচ বন্ধ করে দেওয়ায় এবং তাদের নানা অবহেলার কারণে রক্ষিত আলুর বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। আলু কৃষক কনক জানিয়েছেন, তার রক্ষিত ৮শ বস্তা আলু থেকে ৭৮ বস্তা আলু কয়েকদিন আগে বিক্রি করলে আলু পচাঁ বের হওয়ার কারনে সমস্ত আলু ফেরত এসেছে। কৃষক জাহিদুল হক জানিয়েছেন, তাজ কোল্ড ষ্টোরেজে তার রক্ষিত ৭শ বস্তা বীজ আলুর মধ্যে ২শ বস্তা পঁচা বের হয়েছে। কৃষক ভুলু জানিয়েছেন, তার ৩শ ৪৩ বস্তা আলুর মধ্যে বের করা ৩৪ বস্তা আলুই পচে গেছে। একই কথা জানান আলু চাষি সেলিম, রফিক, জুলহাস, মামুনসহ অনেক কৃষক। তাদের সবারই অভিযোগ, ওই কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত আলুর যেগুলোই বের করা হচ্ছে, সেগুলোর অর্ধেকই পচা পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনতে কোল্ড ষ্টোরেজে আসা পাইকার মোজাম্মেল হক জানান, এখানকার অধিকাংশ আলু পঁচা বলে কিনতে পাচ্ছি না। যে সমস্ত আলু বের করা করা হয়েছে, তার অধিকাংই পঁচা বের হতে দেখে, যাদের আলু এখনও বের হয়নি এমন শত শত আলু চাষি আতংকে আছে।
মঙ্গলবার বিকেলে খোজ নিয়ে জানা যায়, এখনও কোল্ড ষ্টোরেজে অন্তত ১ লক্ষ বস্তা আলু রয়েছে। এ ব্যাপারে তাজ কোল্ড ষ্টোরেজের ম্যানেজার রফিকুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কোল্ড ষ্টোরে কত বস্তা আলু আছে তার হিসাব দেখাতে পারেননি। এসময় তিনি কোল্ড ষ্টোরেজের গাফেলতির কথা অস্বীকার করেন এবং এক পর্যায়ে তার লোকজন নিয়ে সাংবাদিকদের সামনেই অভিযোগকারী কৃষকদের সাথে বাগ-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। শেরপুরের বিএডিসি (আলুবীজ) উপ-পরিচালক মো. বদর উদ্দিন জানান, একই আলু সরকারী কোল্ড ষ্টোরেজে রাখা হলেও তা নষ্ট হয়নি। ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণেই হয়তো তাজ কোল্ড ষ্টোরেজে রাখা আলুতে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
