শেখ হাসিনার আমলেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয় : মতিয়া চৌধুরী
পিতা দিয়ে গেছেন স্বাধীনতা, কন্যা দেখাচ্ছেন পথ : ইয়াফেস ওসমান
স্টাফ রিপোর্টার : মৃত্যুর পর নালিতাবাড়ীর মাটিতে সাধারণ মানুষের কাতারে নিজের কবর দিতে ওছিয়তের কথা জানালেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রী,বেগম মতিয়া চৌধুরী। তিনি ১৯ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় তার নির্বাচনী এলাকা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গেরাপচা গ্রামে বিনা উপকেন্দ্র উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবারকে বলা ওই ওছিয়তের কথা জনগণকে জানান দেন। এসময় তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, আমি এক সময় ছাত্র রাজনীতি করার সময় আপনাদের এলাকায় এসে শুধু বক্তব্য দিয়ে চলে গেছি। এরপর আপনারা আমাকে এই আসন থেকে নির্বাচন করিয়ে এমপি-মন্ত্রী করে ঋণী করেছেন। এ ঋণ শোধ করার নয়। আমি আমার পরিবারকে বলে দিয়েছি আমার মৃত্যু ঘটলে যদি লাশ পাওয়া যায়, তাহলে নালিতাবাড়ীর মাটিতে সাধারণ মানুষের মতো কবর দিবেন। আমার কবরে কোন চিহ্নও রাখা হবেনা। আমি মাটির সাথে মিশে যাব। আপনাদের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। এ সম্পর্ক সকল কিছুর উর্দ্ধে। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহুর্ত ,প্রতিটি সময় কাটে শুধু বাংলার মানুষের কথা ভেবে। বিশেষ করে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ খাদ্যে স্বয়সম্পূর্ণ হয়। শেখ হাসিনার আমলে কাউকে না খেয়ে থাকতে হয়না। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে। উন্নয়নের জোয়ার বয় দেশের সর্বত্র। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যাভাব দুর হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে। নতুন জাতের ধান আবাদে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। মন্দার আবাদ হচ্ছে বিনা-৭। যে সময়ে মানুষের হাতে টাকা থাকে না সেই সময় স্বল্প মেয়াদের এই ধান পেয়ে কৃষক খুবই উপকৃত হয়।
বিনা উপকেন্দ্রের উদ্বোধক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ড. ইয়াফেস ওসমান বলেন, পদ্মা বহিবে প্রবাহমান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ডক্টর ওয়াজেদ মিয়ার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তাঁর ব্যাপক ভুমিকা ছিল। শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশ আজ তথ্য সেবায় অনেক বেশি এগিয়ে। আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন ৪ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করতো আজ বাংলার ১১কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে। মানুষ বুঝে গেছে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে মানুষের জীবন অনেক সহজ হবে। পিতা দিয়ে গেছেন স্বাধীনতা, কন্যা দেখাইল পথ। এতে মানুষের জীবনের পরিবর্তন ঘটছে। তিনি আরও বলেন, ভালবাসাই সবচেয়ে পাওয়ার। আমরা মানুষকে ভালবেসে জয় করতে চাই। আগামী দিনে তথ্যসেবা নির্ভর বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে তিনি মতিয়া চৌধুরীর নৌকায় ভোট চেয়ে উপস্থিত জনগনের সমর্থন আদায় করেন।
কৃষিমন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর এস.এম.নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেরপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ,কে.এম ফজলুল হক চান, ময়মনসিংহ বিনা এর মহা পরিচালক ডক্টর এম এ সাত্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল, নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আব্দুল হালিম উকিল, সাধারন সম্পাদক মোকছেদুর রহমান লেবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামান প্রমুখ। এসময় কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের খামারবাড়ী ঢাকার মহা পরিচালক মুকুল চন্দ্র রায়, জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানুসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পারমানবিক পদ্ধতি ব্যবহার করে শস্যের উন্নত ও উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন, মৃত্তিকা-সার-পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রযুক্তি উদ্ভাবন, রোগ ও কীটনাশকপ্রতিরোধী জাত, প্রতিকুল পরিবেশ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ওই বিনা উপকেন্দ্রটি বিরাট ভুমিকা পালন করবে। তাছাড়া কোন মাটিতে কী ধরনের ফসল উৎপাদন হবে তা নিশ্চিত করা যাবে এই কেন্দ্রের মাধ্যমে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বায়ত্বশাসিত বিনা উপকেন্দ্রটি ৭ দশমিক ৮৫ একর জায়গায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নালিতাবাড়ীতে বর্তমান সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্প।
