ইমরান হোসাইন, তানোর (রাজশাহী) : রাজশাহীর তানোরে আমন ক্ষেতে লক্ষীর গুয়ে (ফল্স ইস্মাট ছত্রাক) কৃষকের সর্বনাশ ডেকে আনছে। এনিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। স্থানীয় কৃষি অফিস বলছেন, এধরণের রোগের কোন কীটনাশক তেমন নেই। এরপরও তারা ছত্রাকনাশক ব্যাভিসটিন, টপসিম এম, নওইম ও কার্বোজিম কীটনাশক প্রয়োগের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে কোন উপকার হচ্ছে না বলে ভুক্তভোগি কৃষকের অভিযোগ।
জানা যায়, পুরো উপজেলা জুড়ে প্রায় দেড় হাজার আমনের রোপিত ক্ষেতে ৪৯ ও স্বর্ণা জাতের ধানের শীষে ফল্স ইস্মাট ছত্রাক নামক বা কৃষকের ভাষায় লক্ষীর গু দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তা ধরে বৃষ্টির পরে এই লক্ষীর গুয়ে বিশেষ করে ৪৯ জাতের ধান আক্রান্ত হয়েছে। এ কারণে ধানের শীষের প্রতিটি ধান কালছে হলুদ রঙ্গে গুটি গুটি হয়ে ফলস ইস্মাট নামক রোগে ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে তানোর পৌর এলাকার জিওল-চাঁদপুর গ্রামের কৃষক শুকুর আলী ও ময়েদ আলী জানান, চলতি আমন মৌসুমে তারা প্রায় ৬ বিঘা জমিতে ৪৯ জাতের ধান রোপণ করেছেন। তাদের ধান বর্তমানে কলাপাক ধরেছে। গত এক সপ্তা’র ব্যবধানে তাদের রোপিত ধানের প্রায় শীষ লক্ষীর গুয়ে আক্রান্ত হয়েছে। হঠাৎ করে এই রোগের দেখা দেওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। নিরুপাই হয়ে তারা গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় কীটনাশক ডিলার ও কৃষি অফিসের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নিকট জানান। এধরণের রোগের কথা শুনে ডিলার ও কৃষি অফিস ছত্রাকনাশক ব্যাভিসটিন, টপসিম এম, নওইম ও কার্বোজিম কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেন। তারা তাদের কথা মত দুদিন আগে ব্যাভিসটিন প্রয়োগ করেছেন। এরপরও কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে তার রোপিত ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের রোপিত ধান নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। একই ধরনের কথা জানান, মথুরাপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী, আলা, হানিফসহ পুরো উপজেলা শতশত কৃষক।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার হাসানুল কবীর কামালী জানান, উপজেলার প্রত্যেক কৃষকের জমিতে ফলস ইস্মাট (লক্ষীর গু) ছত্রাকনাশক রোগ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিদিন খবর আসছে। বিশেষ করে ৪৯ জাতের ধানে ওই রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগের ধরণ সম্পর্কে তারা অবগত নন। এরপরও রোগটি নিরাময়ের জন্য কৃষকদেরকে কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কীটনাশক প্রয়োগেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে কৃষকরা জানাচ্ছেন। তবে, এ নিয়ে কৃষি বিভাগ রবিবার থেকে রোগ নিরাময়ে ধানের মাঠে নেমেছেন।




