এম.এ ছালাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরে সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে বিস্তীর্ণ আমন ধানের ক্ষেত। আর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মাঠের ধানক্ষেতগুলো সবুজ থেকে হলদে রূপ ধারণ করবে। দিগন্ত জুড়ে আমন ধানের মনকাড়া ওইসব সবুজ ধানের ক্ষেত জুড়িয়ে দিচ্ছে কৃষাণ-কৃষাণীর মন ও প্রাণ।
খরার তীব্রতায় ধান মাঠের অবস্থা যখন খারাপের দিকে যাচ্ছিল ঠিক তখনই প্রকৃতিতে অঝোর ধারার বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশির্বাদ বয়ে এনেছে। বোরোর পর গত মৌসুমে লাগামহীন খরচ আর হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে আউশ আবাদ করেন নওগাঁর মহাদেবপুরের হাজার হাজার কৃষক। কিন্তু হাটবাজারে ধানের উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন তারা। ধারাবাহিক হতাশার পরও কৃষক নতুন উদ্যোমে আমন আবাদে ঝুঁকে পড়েন। কৃষকদের সেই উদ্যোম ও পরিশ্রমে মাঠে ধানের অবস্থা বর্তমানে খুবই ভাল। সবুজে ছেয়ে থাকা ধান ক্ষেতে এখন টুকিটাকি পরিচর্যা করছেন কৃষাণ-কৃষাণী। ধান ক্ষেতের আগাছা ও ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে এবার কৃষকরা নানা পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। কীটনাশকের পাশাপাশি বেশীরভাগ কৃষক এবার জমির আইলে ডাল-কঞ্চি পুঁতে পার্চিং পদ্ধতিতে ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন করছেন। এখানে আমন চাষাবাদকৃত জমির ৯০ ভাগ এলাকায় কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং পদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন করা হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়। কৃষকরা জানায়, কীটনাশকের চেয়ে ক্ষেতের আইলে ডাল-কঞ্চি ব্যবহার করে ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন অনেক সহজ। এতে জমিও থাকে কীটনাশক মুক্ত, আর মাটির ঊর্বরা শক্তি থাকে অক্ষন্নœ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে এখানে ৩শ ২০ হেক্টর বেশী জমিতে আমন চাষ হয়েছে। গত মৌসুমে যেখানে ২৬ হাজার ৭শ ৩৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল সেখানে চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলনেরও আশা করছেন ওই অঞ্চলের কৃষক ও কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
