ads

বৃহস্পতিবার , ১৭ অক্টোবর ২০১৩ | ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

দই নেবেন গো দই… ভালো দই…

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
অক্টোবর ১৭, ২০১৩ ৪:০৭ অপরাহ্ণ

New Imageহুমায়ুন কবির মৃধা, সিরাজগঞ্জ : বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রুপকার রবীন্দ্রনাথের ‘দইওয়ালা’ গল্পের দই নেবেনগো দই, ভালো দই! এভাবে হাঁক ডাক ছেড়ে দুটি ডালায় বোঝাই করে কাধে ঝুলিয়ে গ্রামের মেঠোপথে আর হাট-বাজারের আনাচে কানাচে একসময় বিক্রি হতো নান্দনিক স্বাদের মিষ্টিদই। এখন কদাচিৎ তেমন চোখে পড়ে। বর্তমানে রবীন্দ্রনাথের সেই গল্পের দৃষ্টান্ত স্থাপনে সিরাজগঞ্জের দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। একসময় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি-রাজাপুর-সোহাগপুর এই নামগুলি আলোচনায় এলেই চলে আসে তাঁত-শাড়ী-লুঙ্গীর কথা। বর্তমানে সেসব তাতশিল্পের পাশাপাশি ওই অঞ্চলের তৈরি  সুস্বাদু মিষ্টিদইয়ের নামটিও উঠে আসছে সর্বাগ্রে। রাজাপুর-সোহাগপুর এর মিষ্টিদই উত্তরবঙ্গের ‘প্রবেশদ্বার’ বলে পরিচিত সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি-রাজাপুর-সোহাগপুরের দইয়ের সুনাম দেশের সীমানা ছাপিয়ে এখন দেশের বাইরেও। সিরাজগঞ্জে কেউ বেড়াতে এলে তার যেন দইয়ের স্বাদ আস্বাদন করা চাই, তেমনি এ জেলা থেকে বাইরে বেড়াতে গেলেও তার সঙ্গী হয় দই। তাছাড়া বিয়ের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানও দই ছাড়া কল্পনা করা যায় না। এ অঞ্চলে অতিথি আপ্যায়নে দই যোগ করাটা ঐতিহ্যের অংশ। আর ঈদ আয়োজনে দই থাকাটা অত্যাবশ্যক। তা না হলে ঈদের অনেক খাবারের অয়োজনই যেন ফিকে মনে হয়। সিরাজগঞ্জের দইয়ের স্বাদ নিতে যে কেউ আগ্রহী হয়ে ওঠেন। খাওয়ার পর স্বীকারও করেন, অন্য এলাকার দইয়ের সাথে এখানকার দইয়ের স্বাদ অনেকটাই ভিন্ন। সেই ভিন্নতা অবশ্য প্রশংসার দাবিদার।   মোট কথা, সিরাজগঞ্জ আর দই শব্দগুলো সময়ের হাত ধরে একে অন্যের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিরাজগঞ্জের দই মানেই আত্মীয়তার মেল-বন্ধন! দই সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার। ব্যাপক প্রচলনের কারণে এটি সামাজিকতার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে উৎপাদন ও বিপনন, চাহিদা ও জনপ্রিয়তা। দই তৈরির প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনও হয়েছে ব্যাপকভাবে। প্রাগৈতিহাসিক যুগে ঘোষ সম্প্রদায় ওই শিল্পের সূচনা করেন।  ওই সময় শাহী মহলেও দইয়ের কদর ছিল ব্যাপক। কালের পরিবর্তনে এখন শুধু গ্রামই নয়, শহরকেন্দ্রিক দই উৎপাদনের উৎসাহ বেশী, শহরকেন্দ্রিক দই উৎপাদনের বিষয়টি মোটামুটি ৮০/৯০ বছর আগে রাজাপুর-সোহাগপুর ঘোষ সম্প্রদায়ের কারিগর আত্মীয়-স্বজন বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রাথমিকভাবে শুরু করেন। এর সূচনাকারীরাও ছিলেন ঘোষ সম্প্রদায়। কথিত আছে, শেরপুরের গৌর গোপাল ঘোষ দইয়ের স্বাদ ও মানে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। শেরপুর উপজেলা থেকে ২০ কিলোমিটার পায়ে হেটে এসে তিনি বগুড়া শহরে দই ফেরি করে বিক্রি করতেন। তার তৈরি করা দইয়ের স্বাদ পেয়ে উচ্ছ্বসীত হয়ে ওঠেন তৎকালীন পাকিস্তানের নওয়াব মোহাম্মদ আলী। তিনি গৌর গোপালকে বগুড়া শহরে বসত এবং দইয়ের কারখানা স্থাপনের জায়গা করে দেন বলে উল্লেখ আছে। প্রথমদিকে তিনি শুধু বগুড়ার নবাব পরিবারের জন্যই দই তৈরি করতেন। পরে তার ভাই সুরেন ঘোষের সাথে ব্যবসা সম্প্রসারিত করে শুরু করেন বগুড়ার দই। তখন থেকে শুরু হয় বগুড়ার সেই নান্দনিক সুস্বাদু দই’র খ্যতি। জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঘোষ সম্প্রদায়ের অনেকেই ভারতে চলে গেছেন, কেউ কেউ এখন অন্য পেশায় কাজ করেন, রাজাপুরে এখনো সুনামের সাথে দই’র খ্যতি ধরে রেখেছেন সুধির ঘোষ, আনন্দ ঘোষ, গুটু ঘোষ, এদের মধ্যে সুধির ঘোষ অন্যতম। এখন ঘোষ সম্প্রদায়ের দই তৈরির গোপন ফরমুলা অনেকের হাতে চলে গেছে । সেই ফরমুলাই সিরাজগঞ্জ জেলাই দইয়ের এক নতুন যুগের সূচনা করেন ধানসিড়ি দইঘর নামের প্রতিষ্ঠানটি। বগুড়ায় দই শিল্পে সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি দাঁড়া করান মহরম আলী। বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আকবরিয়া হোটেলও দই তৈরি ও বিপণনের সুখ্যাতি রয়েছে। দই তৈরির প্রক্রিয়া, প্যাকিং এবং বিপননে তার প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি দই শিল্পের নতুন সম্ভাবনা খুলে দিয়েছে। স্বাদের উন্নতি এবং পরিবহনের সুবিধা থাকার কারণে বগুড়ার দই দেশের গন্ডি পেরিয়ে বর্হিবিশ্বেও সমাদৃত। এছাড়াও শ্যামলী, রুচিতা, চিনিপাতা, সাউদিয়া, দই বাজার, ফুড ভিলেজ নামের আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান দই উৎপাদন এবং বিপনন করছে সারাদেশে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!