এম. এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : ‘নিউ রাইস ফর আফ্রিকা’ বা নেরিকা ধানের নাম এদেশে এখন অনেকটাই পরিচিত। তাই এখানকার চাষীরা এ ধান নিয়ে আশার আলো দেখছে। বারোমাসী ধান হিসেবে দেশে প্রথমবারের মতো নেরিকার বিভিন্ন জাতের ধানের সফল চাষ নীলফামারীতে হচ্ছে।

ওই ধান চাষে শতভাগ সফল হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ কৃষি ফার্ম ‘ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার’। ওই জাতের ধান আবাদের ফলে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতিসহ উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা নিরসনে একধাপ অগ্রগতি হয়েছে বলে ফার্মে কর্মরত গবেষকরা জানায়। ওই খামার মুলত: আলু বীজ উৎপাদনের খামার হলেও দেশের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফসলের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ ও বীজ উৎপন্ন করে থাকে। নেরিকা ধান যে কোন মৌসুমেই চাষ করা যায়। বীজে সুপ্ততা না থাকায় ফসল কাটার পরই সেই বীজ দ্বারা পরবর্তী ফসল ফলানো সম্ভব। উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় নেরিকা ধান হেক্টর প্রতি ৬ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি খরা সহিষ্ণু বিধায় ২১ দিন পর্যন্ত পানি না পেলেও ফসলের ক্ষতি হয়না। এছাড়াও নেরিকা ধান কাটার সময় ঝরে পড়ে না। ফলে ফসলের ঘাটতি হয়না। এটি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ ও ভাত খেতে সুস্বাদু। বন্যা, খরা ও লবণাক্ততাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষম ওই জাতের ধান। দেশে বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ শুরু হওয়ার পাশাপাশি নীলফামারীতেও ব্যাপকভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে নেরিকা জাতের ধান আবাদের উপযোগিতা পরীক্ষার জন্য দেশের ২৪টি বীজ উৎপাদন খামার ও ২৭ জন চুক্তিবদ্ধ চাষী এই ধান উৎপাদন করছেন। জেলার ডোমার উপজেলার সোনারায় ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার নেরিকার বিভিন্ন জাতের ধান আবাদের দায়িত্ব পায়। নেরিকা- মিউট্যান্ট জাতের মাঠ দিবসে ধান ফলনের বিভিন্ন চিত্র পাওয়া যায়। ধান কাটার পর দেখা গেছে, এতে হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৫.৫০ টন। মাত্র ৯০ দিনে এই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে।
