এ কিউ রাসেল, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী গরুর হাট। সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার বসে ওই হাট। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতি হাটে ৪শ থেকে ৫শ ট্রাক গরু চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এবার হাটে আমদানী বেশি থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম অনেকটা কম হওয়ায় হতাশা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। ব্যবসায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের অফার ছুড়ে দিচ্ছেন তারা। অন্যদিকে কম দামে গরু কিনতে পারায় দারুন খুশি ক্রেতারা।
সরেজমিনে গোবিন্দাসী গরু হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাটে প্রচুর গরু আমদানী থাকলেও ক্রেতা নেই তেমন। দাম কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কায় পাইকারদের উপস্থিতি অনেকটা কম। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। লাখ লাখ টাকার গরু কিনে বেকায়দায় পড়েছেন তারা। অতীতকালের ভয়াবহ লোকসানের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন ওই হাটের গরু ব্যবসায়ীরা। কালিহাতী উপজেলার বল্লববাড়ি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী মুন্নাফ দু’টি ষাঁড় নিয়ে ১৫ দিন ধরে এ হাটে অবস্থান করছেন। ওই দু’টি ষাঁড়ের দাম হাঁকছেন ১০ লাখ টাকা। মুন্নাফ জানায়, ক্রেতারা ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলছেন। ১০ লাখ টাকায় গরু বিক্রির টার্গেট পূরণ করতে প্রতিটি গরুর জন্য তিনি একটি করে মোটরসাইকেল ফ্রি দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। তারপরও ক্রেতা পাচ্ছে না।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম বলেন, গত ২৫ বছর ধরে এ হাটে গরু বিক্রি করে আসছি। এবারের মতো লোকসানের মুখ আর কোন বছর দেখিনি। ৩০টি গরু রয়েছে সামনে বাকি কয়েকটি দিনে দাম কিছুটা ভালো গেলে লোকসান কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবো। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ব্যবসায়ী আজগর আলী বলেন, ১শ ১৩টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। এ পর্যন্ত ৩৬টি গরু বিক্রি করেছি। খরচের যে অবস্থা আর দাম যে কম তাতে চালান নিয়ে ঘরে ফেরাই মুশকিল।
সিলেট থেকে গরু কিনতে আনিসুর রহমান, গত ১৫ বছর ধরে এ হাট থেকে গরু কিনছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম অনেকটা কম। তারপরও বিক্রেতারা বেশি লাভের আশায় দর কষাকষি করছে। অন্যদিকে কম দামে গরু কিনতে পারায় দারুন খুশি ক্রেতারা। হাটে ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গরু বেচাকেনা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দিক চিন্তা করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
হাটের বিষয়ে ইজারাদার লিটন মন্ডল বলেন, থাকা-খাওয়া ও ব্যাংক লেনদেনসহ নানা ধরনের সুবিধা থাকায় ব্যবসায়ীরা গোবিন্দাসী গরু হাটের দিকে বেশি ঝুঁকছে। প্রতি হাটে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার গরু বেচাকেনা হয় বলে জানান তিনি।