ads

শুক্রবার , ১১ অক্টোবর ২০১৩ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

বিদ্যুতের আলো বঞ্চিত দূর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা সৌর বিদ্যুত

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
অক্টোবর ১১, ২০১৩ ১১:২৩ অপরাহ্ণ

a 10-10-13 nandigram Bograমো. সুজন রানা, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : শহর আর গ্রামের মাঝে এখন আর তেমন বিস্তর তফাৎ নেই। এখন প্রতিটি গ্রামই যেন হয়ে উঠেছে এক একটি ছায়া শহর। প্রযুক্তির ছোয়ায় শহর যেমন হচ্ছে উন্নত থেকে উন্নততর। গ্রামও সেখানে প্রযুক্তির ছিটেফোটায় হাঁটছে শহরের পিছু পিছু। আগে, অনেক আগে গ্রাম মানেই যেন ছিল একগাদা কুংস্কারে ভরা। গ্রামের মানুষ সেসব কুসংস্কারকে পাঠিয়েছে নির্বাসনে। এখন গ্রামে আর তেমন কু-সংস্কারমূলক কথাবার্তা শোনা যায় না, দেখা যায় না কোন কাজকর্ম। যেটুকু শোনা যায় বা দেখা যায় সেটা যৎসামান্যই। শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে মেয়েরাও। বাংলাদেশ ৬৮ হাজার গ্রামের দেশ। যেখানে ৬৪টি জেলা শহর মাত্র। যেহেতু গ্রাম এখন ছায়া শহরে পরিণত হচ্ছে, সেহেতু এর সংখ্যা বাড়তেও পারে। যদি এই ছায়া শহরগুলো সত্যিকারভাবেই ছায়াকে টপকে সত্যিকারের সব অবকাঠামো নিয়ে শহরে রুপান্তরিত হয়, তবে নিশ্চিতভাবেই আগামীতে আমাদের শহরের সংখ্যা যে বেড়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এখানে ছায়া শহরের যে কথাটি উল্লে¬খ করা হলো, এই ছায়া শহর হিসেবেই আমাদের ৬৮ হাজার গ্রামের প্রতিটি গ্রামকে তুলে নিয়ে আসতে হবে। যেন তারা শহরের পাশাপাশি ছায়া শহর হিসেবেই দাঁড়াতে পারে। যেন সেইসব গ্রামে থাকে শহরের মত নাগরিক সুবিধা। তবেই গ্রাম এবং শহরের মাঝে বৈষম্য এবং ব্যবধান কমে যাবে। এবং বলাই বাহুল্য এই ব্যবধান না কমা পর্যন্ত থেকেই যাবে ৬৮ হাজার গ্রামের বাংলাদেশ নামের এই ভূ-খন্ড।
তবে এখনও অনেক গ্রাম রয়েছে, যেখানে শিক্ষার আলো পৌছালেও পৌছায়নি বিদ্যুতের আলো। তাই বলে থেমে নেই সেসব গ্রামের মানুষ। আজ থেকে প্রায় এক-দেড় যুগ আগে যেসব গ্রামের মানুষ কুপি বাতি, হারিকেন, হ্যাজাক জ্বালিয়ে রাতে ঘর আলোকিত করতো, সেখানে এসব গ্রামের প্রায় ৮০% মানুষ এখন পুরোপুরি নির্ভরশীল সৌর বিদ্যুতের উপর। সূর্যের আলো বা তাপ থেকে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ব্যাটারীতে সঞ্চিত হয় সৌরশক্তি। যে শক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে বাল্ব, ফ্যান, টিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্র চালানোর কাজে। সৌর বিদ্যুতব্যবহারকারীদের লোডশেডিংয়ের কোন সমস্যা নেই। তবে যেদিন আবহাওয়া খারাপ থাকে সেদিন তাদের এই বিদ্যুত নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। জানা গেছে, সূর্যের সাহায্যে ব্যাটারিতে সঞ্চিত বিদ্যুত কম ব্যবহার করলে (যেসব দিন আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাব থাকে) সেক্ষেত্রে দুই দিন পর্যন্ত চালানো যায়।
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে এ সৌর বিদ্যুতের দেখা মেলে। গত ক’দিন আগে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভরতেতুলিয়া, বিলশা বেলঘড়িয়া, চৌদীঘি, মাড়িয়া, ভোবানীপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার হয়ে থাকে। সৌর বিদ্যুতের প্যানেল ২০, ৪০, ৫০, ৬৫, ৮৫, ১১৫ থেকে আরো বেশি ওয়াটের হয়ে থাকে। ১২ ভোল্টেজের ব্যাটারীর সঙ্গে যুক্ত করা হয় সাধ্যমত কেনা  সোলার প্যানেলের ওয়াট। তবে মাড়িয়া গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ ৫০-৬৫ ওয়াটের সৌর প্যানেল ব্যবহার করে থাকেন। কারণ, ৫০-৬৫ ওয়াটের সোলার প্যানেল তাদের সাধ্যের মাঝে রয়েছে।
স্থনীয় রেজাউল করিম কামাল জানালেন, ভোবানীপুর গ্রামে গত ৪ বছর আগে গুটি কয়েক বিত্তশালী ব্যক্তির বাড়িতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়। তারপর একের পর এক বাড়ির টিনের চালায় দেখা যেতে শুরু করে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল। এখন এ গ্রামের প্রায় ৮০% মানুষ সৌর বিদ্যুত ব্যবহার করছে। গ্রামীণ শক্তি, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় গ্রামের মানুষ এই সৌর বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে বলে জানান তিনি। এ বিদ্যুতের সাহায্যে ২৫ থেকে ৬০ ওয়াটের বাল্ব, টেলিভিশন, ফ্যান ইত্যাদি চালানো যায়।
সুমন ইসলাম নামের আরেকজন সৌর বিদ্যুত ব্যবহারকারী জানালেন, তিনি তার বাড়িতে একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা দামের সৌর বিদ্যুতের সরঞ্জাম কিনেছেন কিস্তির মাধ্যমে। কেনার সময় তাকে দিতে হয়েছে ৫ হাজার টাকা। বাদ বাকী টাকা চুক্তি অনুযায়ী পরিশোধ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অন্ধকারে থাকার পর গত ২ বছর ধরে সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে ঘরে আলো জ্বলছে, এতে খুব ভাল লাগছে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াতেও সুবিধা বেড়েছে।
মাড়িয়া গ্রামের রাজু আহম্মেদ  নামের এক সৌর বিদ্যুত ব্যবহারকারী জানালেন, এ বিদ্যুত পদ্ধতি আসায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। রাতে আগে অন্ধকারে অনেক সমস্যায় পড়তে হতো। এখন আর তেমন কোন সমস্যা হয় না। নন্দীগ্রামের গ্রামীণ শক্তি সোলারের দোকান থেকে এ সৌর বিদ্যুত ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌছায়নি সেখানে সৌর বিদ্যুত এক বিপ্ল¬ব ঘটিয়েছে। যদি সৌর বিদ্যুতের আবিষ্কার না হতো, তাহলে হয়তো এখনও আমাদের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষদের থাকতে হতো ঘোর অন্ধকারে অন্ধকারে। নির্ভর করতে হতো সেই মান্ধাতা আমলের কুপি বাতি, হারিকেন, হ্যাজাকের উপর।
তবে সৌর বিদ্যুত প্রসারে সোলার প্যানেলসহ যাবতীয় কাজে খরচের পরিমাণ নিম্নবিত্তদের কাছে একটু বেশি হওয়ায় এর প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যদি তাদের সামর্থের মধ্যে আসতো তাহলে আরো বেশি প্রসার লাভ করতো খুব দ্রুত। গ্রামাঞ্চলে সৌর বিদ্যুতের প্রসার বাড়াতে হলে এই খরচ অবশ্যই কমিয়ে আনা দরকার। এদিকে যদি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সোলার প্যানেল ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দেশেই তৈরি করা যায় তাহলে খরচ কমে আসবে। উপকৃত হবে দেশের দূর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!