শ্যামলবাংলা ডেস্ক : দেশের বৃহত্তম ওড়ালসড়ক ‘হানিফ ফ্লাইওভার’কেই এবারের ঈদ উপহার বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১১ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৪টায় ওই ফ্লাইওভারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফলক উন্মোচন করে উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে উড়ালসড়ক ব্যবহারের টোল দেন। এরপর রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশে তিনি বলেন, হাতিরঝিল চালুকরণ ছিল নববর্ষের উপহার, কুড়িল ফ্লাইওভার ছিল ঈদুল ফিতরের উপহার আর মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার পবিত্র ঈদুল আজহার উপহার। এসময় তিনি সরকারের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমরা সরকারে আসার পর চেষ্টা করি মানুষের জীবন স্বাভাবিক রাখতে। এ সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, হানিফ ফ্লাইওভার প্রকল্পের পরিচালক মো. আশিকুর রহমান এবং ওরিয়ন গ্রুপ ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালের ২২ জুন ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে (পিপিপি) নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় এ ফ্লাইওভারের সঙ্গে আশেপাশের প্রধান সড়ক ও বাস টার্মিনালের সংযোগ রাখা হয়েছে। ৪ লেনের এ উড়াল সড়কে প্রবেশের জন্য ৬টি এবং বের হওয়ার জন্য ৭টি পথ রয়েছে।
১৯৯৮ সালে গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও দফায় দফায় দৈর্ঘ্য ও খরচ বেড়ে দীর্ঘ ১৫ বছর পর ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় পিপিপির ভিত্তিতে এ প্রকল্পের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ওরিয়ন গ্রুপই ওই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে। ফ্লাইওভারের নকশা করে দিয়েছে কানাডীয় কোম্পানি লি কানাডা। আর নির্মাণ কাজে ঠিকাদার হিসাবে রয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল লিমিটেড। ঢাকা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে এ উড়ালসড়ক নির্মিত হয়।
বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ওরিয়ন গ্রুপ এ ফ্লাইওভারের ব্যবস্থাপনা, টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। চালু হওয়ার পর থেকে ২৪ বছরে পাওয়া টোলের ভিত্তিতে নির্মাণ ব্যয় তুলে নেবে তারা। প্রতিদিনের আদায় করা টোলের ৫ শতাংশ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তহবিলে জমা হবে। ২৪ বছর পর এর দায়িত্ব নেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। হানিফ ফ্লাইওভারের আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১০০ বছর। চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩০টি জেলার যানবাহন ঢাকার প্রবেশপথের যানজট এড়িয়ে এই ফ্লাইওভার দিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারবে।
যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া থেকে গুলিস্তানের নিমতলী মোড় পর্যন্ত এ ফ্লাইওভারে যানবাহন প্রবেশের পর বের হওয়ার পথে টোল দিতে হবে। টোলের হার ধরা হয়েছে ট্রেইলার ২শ টাকা, ট্রাক ১শ ৫০ টাকা, বাস ১শ ৫০ টাকা, মিনি বাস ১শ টাকা, পিকআপ ৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস ৫০ টাকা, জিপ ৪০ টাকা, প্রাইভেট কার ৩৫ টাকা, অটোরিক্সা ১০ টাকা ও দুই চাকার বাহন ৫ টাকা। তবে পায়ে হেঁটে যাতায়াতে কোনো বাধা থাকবে না, এজন্য টোলও দিতে হবে না।