এম. এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : চামড়ার বাজারে ধস কাটেনি। কোরবানির চামড়ার বাজার নিয়ে এবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের চামড়া ব্যবসায়ী পুঁজি সংকটে ভুগছেন। তাদের পুঁজির বড় অংশটাই আটকে আছে ঢাকার ট্যানারী মালিক ও নাটোরের আড়তদারের কাছে। তাদের কাছে এ অঞ্চলের ৩শ’ চামড়া ব্যবসায়ীর পাওনা আটকে গেছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। কোরবানি ঈদের আর মাত্র ৫দিন বাকি থাকলেও বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে ট্যানারী মালিকদের কোন উদ্যোগ নেই। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই মহাজন কিংবা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও সংস্থার কাছে চড়া সুদে ঋন নিয়ে পুঁজি সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বছরে রপ্তানিজাত প্রায় ৬০ শতাংশ চামড়া কোরবানির ঈদে সংগ্রহ করা হয়। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার কারণে ২ হাজার টাকার চামড়া বর্তমানে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো পুঁজি সংগ্রহ করতে না পারলে ও সংকট না কাটলে এবারের কোরবানির ঈদে চামড়ার বাজারে ধস অব্যাহত থাকবে বলে ব্যবসায়ীরা আশংকা প্রকাশ করছেন। এ সুযোগে সংগোপনে চামড়ার বাজার ভারতীয় ব্যবসায়ীরা দখলে চলে যেতে পারে এমন আশংকাও রয়েছে বলে জানান চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। ইতোমধ্যে চামড়া পাচারকারী চক্র মোটা পুঁজি নিয়ে মাঠে নেমেছে এবং স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে চামড়া কেনার পাঁয়তারা করছে। সুত্র জানায়, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের নীলফামারী, সৈয়দপুর, তারাগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধায় ছোটবড় মিলিয়ে চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ১ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে আড়তদার রয়েছেন ২শ’ ৫০ জন। গেল দুটি কোরবানি ঈদে সংগৃহিত চামড়া ঢাকার ট্যানারী মালিক ও নাটোরের আড়তদারের কাছে বিক্রি করা হয়। কিন্ত কখনোই তারা পুরো টাকা পরিশোধ করেনি। ফলে তাদের কাছে ওই দুই ঈদের পাওনা আটকে গেছে ১৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে দফায় দফায় তাগাদা দেয়া সত্বেও ট্যানারী মালিক ও আড়তদাররা তা আমলে নিচ্ছে বলে পাওনাদারদের অভিযোগ। এদিকে ভারতে চামড়া যাতে পাচার হয়ে যেতে না পারে সেজন্য কোরবানি ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।