এ কিউ রাসেল, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) : আব্দুল মালেক; গোপালপুরের ক্ষুদ্র কৃষক থেকে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা একজন খামারী। নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম আর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণায় গরু মোটাতাজাকরণ করে এখন সে স্বাবলম্বীতার মডেল। তার ওই স্বাবলম্বীতায় এলাকার অনেকেই এখন উৎসাহী হয়ে পড়ছেন গবাদীপশু পালনে।
আব্দুল মালেক জানান, গবাধি পশু লালন পালন করার শখ তাদের পরিবারের পূর্ব পুরুষ থেকেই চলে আসছে। তার প্রয়াত বাবা ইন্তাজ আলী নিজের ছেলে সন্তানদের মতো আদর করে গবাদিপশু লালন-পালন করতেন। তখন পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার একাজে সহযোগিতা করতেন মালেক। তখন থেকেই গবাদিপশুর উপর একধরনের দূর্বলতা তৈরি হয়ে গেছে। বিগত দেড়যুগ ধরে তিনি বাণিজ্যিকভাবে গবাদিপশু পালন করে আসছেন। এতে করে তিনি বছরে কয়েক লাখ টাকার গবাদিপশু বিক্রি করে সংসারে ব্যাপক সচ্ছলতা তথা ওই অঞ্চলে মাংস ও দুধের ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ করছেন বলে দাবি করেন।
সরেজমিনে সোমবার পৌরশহরের পটলপাড়া গ্রামের তার নিজ বাড়ীতে গেলে দেখা যায় মো. আব্দুল মালেক (৫০) ও তার পুত্র কামরুল হাসান মিল্টন (২৬) গরুর তদারকিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। পাশেই দাড়িয়ে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন সহকারী মো. ওয়াজেদ আলী।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে একটি ষাড়, ৩টি দুধালো গাভীসহ ৮টি গবাদি পশু পালন করছেন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে তিনি দুটি ষাড় লালন পালন করেছিলেন। সম্প্রতি একটি ষাড় এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। ফ্রিজিয়ান জাতের আরো একটি ষাড় বিক্রির জন্য রয়েছে। বাজারদর ভালো থাকলে এটিও তিনি লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ।
গোপালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা যায়, ১৯১.৪৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় একটি কৃত্রিম প্রজনন উপকেন্দ্র, একটি কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট, ৭টি কৃত্রিম প্রজনন সেবাকেন্দ্র, দুই হাজার ৮৭০টি শংকর জাতের গাভীসহ ৩৬হাজার ৪২১টি গবাদিপশু রয়েছে। সরকারী অনুদানপ্রাপ্ত ২২টি, রেজিষ্ট্রিকৃত ৮৭টি ও ৯৮টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। জি,ডি,পিতে পশুসম্পদের অবদান রয়েছে ২.৭২%। আর আব্দুল মালেকের এধরণের সাফল্য দেখে অনেক বেকার যুবক এধরনের উদ্যাগ গ্রহণ করছে। ফলে একদিকে বাড়ছে পশু পালন, অন্য দিকে তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আসাদুজ্জমান বলেন, ‘আব্দুল মালেক আমাদের একজন নিয়মিত সচেতন খামারি। আমাদের সাথে পরামর্শ ক্রমে গবাদি পশু প্রতিপালন করছে। তার এ সাফল্যে আমরাও খুশি।’
