ভাঙনের মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রন বেঁড়িবাধ ও কাশীপুর গোরস্থান
মোঃ কামরুল হাসান, মহম্মদপুর (মাগুরা ) : গত এক সপ্তাতের অবিরাম বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মধুমতি নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সাম্প্রতিক নদী ভাঙ্গনে মহম্মদপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে কাশীপুর, রায়পুর, রুইজানি ও ভোলানাথপুর গ্রাম। এ প্রর্যন্ত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ২৫ টি পরিবারে শতাধিক ঘরবাড়ি। ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক পরিবার, বন্যা নিয়ন্ত্রন বেঁড়িবাধ, কাশীপুর গোরস্থান, কাশিপুর মসজিদ, ভোলানাথপুরের ২টি পূজা মন্দির, অসংখ্য দোকান-পাটসহ হাজার হাজার একর ফসলী জমি।
অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বর্তমানে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারনে ভাঙন ভয়াল আকার ধারণ করায় নদী তীরবর্তী বসবাস কারী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতংক। উপজেলার কাশিপুর, ভোলানাথপুর, রায়পুর ও রুইজানি নদী তীরবর্তী এসব এলাকার ভাঙনকবলিত অধিবাসীদের এখন দিন কাটছে চরম আতংকে। এসব গ্রামের মসজিদ, মন্দির, ইদগাহ সহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি এবছর বেশী ভাঙনের কবলে পড়েছে।
সম্প্রতি মধুমতি নদীর বয়াবহ ভাঙনে কাশীপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন, রাজ্জাক , তারাপদ চৌধরী, স্বপন, হালাকু খাঁন, অমল বিশ্বাস, মাজেদ মোল্লা, ওহাব মিয়া, আবু মিয়া, সাবু মিয়া, মাজেদ মেম্বর, হাসেম মোল্লা, মতিয়ার মিয়া, আবজাল হোসেন এবং ভোলানাথপুর গ্রামের ২টি পূজা মন্দির সহ খিতিশ চৌধরী ও মনিমোহন চৌধরীর বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে। ৪ গ্রামের ভাঙনের সম্মুখ দ্বারে জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছেন, , রতন চৌধরী, পিরো চৌধরী, হানিফ মোল্লা, অলিয়ার, নওশের, মান্নান, নজির, মন্নু, নান্নু, জাফর, সাদেক মোল্লা, মোসলেম, মিজানুর, আলম, বাকী, ওহাব, আয়েন উদ্দিন, জয়েন উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, আক্কাস মোল্লা, চুন্নু মোল্লা, আনোয়ারুল হক, সবুর মিয়া সহ শতাধিক পরিবারের অসংখ্য ঘরবাড়ি।
অব্যাহত নদী ভাঙন যে কোন সময় আঘাত হানতে পারে মধুমতি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধ ও উপজেলার সর্ব বৃহৎ কাশিপুর গোরস্থান। অন্যদিকে গোপালনগর থেকে পাল্লা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃমিঃ নদীর মাঝ বরাবর জেঁগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কারণে স্রোতপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে প্রবল বেগে নদী তীরে ঢেউ আঁচড়ে পড়ায় নদীর ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলো ক্রমেই ভাঙনের থাবায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। ৫ অক্টোবর শনিবার বিকেলে সরজমিন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে ভাঙনের সম্মুখ দ্বারপ্রান্ত থেকে ঘর-বাড়ি তড়িঘড়ি করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় অসহায় কয়েকটি পরিবারের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। যাদের জায়গা-জমি নেই তারা নদী পাড়েই অস্থায়ীভাবে ঘর তুলে জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা বলেন, আমি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বহী প্রকৌশলী গৌর চন্দ্র সূত্রধর জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইতিমধে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ জলবায়ু ট্রাষ্ট নামক একটি বিদেশী প্রকল্পের কাছে ক্ষয়ক্ষতির বিবরন নির্ধারন পূর্বক একটি প্রজেক্টের আবেদন পাঠানো হয়েছে।
