শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি (বিসিডিএস)’র ডাকে ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সারাদেশে ওষুধের দোকানগুলোতে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালিত হয়েছে। রাজধানীতে ওষুধের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত ওষুধ ব্যবসায়ী, দোকান মালিকদের মুক্তি ও সিলগালা করা দোকানগুলো খুলে দেওয়াসহ ৮ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। পরে সারাদেশে রোগীদের দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিসিডিএস সভাপতি সাদেকুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকেলে র্ধমঘট কর্মসূচি ৪ ঘন্টা কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তদুপরি সকাল-সন্ধ্যার ওই ধর্মঘটে ওষুধ বিক্রি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা। নজিরবিহীন ওই ধর্মঘটের ঘটনায় ভূক্তভোগী অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। খবর শ্যামলবাংলার প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো।

ঢাকা : কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার সর্বত্র ওষুধের দোকানপাট বন্ধ ছিল। ওষুধের বাজারখ্যাত মিটফোর্ট এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকাগুলোতে ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। তবে ক্লিনিকগুলোর ভেতরে থাকা দোকানগুলো থেকে জরুরী প্রয়োজনের ওষুধ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম : কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের সর্বত্র ওষুধের দোকানে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। পাইকারি বাজার হাজারীগলি, বহদ্দারহাট, জামালখান ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার ওষুধের দোকানগুলোসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাড়া-মহল্লার দোকানও বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি সমীর কান্তি শিকদার বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে সর্বাত্মকভাবে ওই ধর্মঘট পালিত হয়েছে।

সিলেট : সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতাল, স্টেডিয়াম মার্কেট ও চৌহাট্টার সব ওষুধের দোকান বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বন্ধ থাকে। সিলেট কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মঈনুল হক চৌধুরী জানান, সিলেটে সমিতির তালিকাভুক্ত প্রায় ৩ হাজার ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। তবে রোগীরা যাতে জরুরি ওষুধ পায় সেজন্য হাসপাতালগুলোর ভিতরের দোকানগুলো খুলতে বাধা দেয়া হয়নি।
বরিশাল : বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বরিশালে ওষুধের দোকানে ধর্মঘট পালিত হয়। তবে জরুরি রোগীদের কথা মাথায় রেখে নগরীর সদর রোডে অবস্থিত কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কার্যালয় থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
রাজশাহী : ধর্মঘট উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরীর কোথাও কোনো ওষুধের দোকান খোলা হয়নি। তবে জরুরি প্রয়োজনে সমিতির রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন কার্যালয় থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
খুলনা : সারা দেশের ন্যায় খুলনাতেও ওষুধের দোকানে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মহানগর এলাকার দোকানগুলো যথারীতি বন্ধ ছিল। তবে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর সামনে একটি করে ওষুধের দোকান জরুরি ভিত্তিতে খোলা রাখা ছিল।
রংপুর : বেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রংপুর মহানগরের মেডিকেল মোড়ের ওষুধের সবচেয়ে বড় মার্কেটটি বন্ধ ছিল। মহানগরের অন্যান্য এলাকাতেও কোন ওষুধের দোকান খোলা রাখতে দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন ক্লিনিকে থাকা দোকানগুলো রোগীদের জরুরী প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় খোলা রাখা ছিল।
বগুড়া : বৃহস্পতিবার বগুড়ার সর্বত্র ওষুধের দোকানে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সবচেয়ে বড় বাজার খান মার্কেটসহ কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, মেরিনা রোড, কানজগাড়ি, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, মোহাম্মদ আলী (সদর) হাসপাতাল এলাকার দোকানসহ অন্যান্য এলাকার সব দোকান সকাল থেকে বন্ধ থাকে।
ময়মনসিংহ : কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ময়মনসিংহের সর্বত্র ধর্মঘট পালিক হয়েছে। ফার্মেসি এলাকা হিসেবে পরিচিত দূর্গাবাড়িসহ শহরের কোথাও কোন ওষুধের দোকান খোলা রাখতে দেখা যায়নি। তবে ক্লিনিকের ভেতরের দোকানগুলো থেকে জরুরী প্রয়োজনের ওষুধ পাওয়া গেছে।
দিনাজপুর : কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ডাকে ধর্মঘটের কারণে দিনাজপুর জেলা শহরের ওষুধের দোকানগুলো সকাল থেকেই বন্ধ ছিল। তবে কোন কোন এলাকা থেকে জরুরি প্রয়োজনে ক্রেতারা ওষুধ সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
নারায়ণগঞ্জ : বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র ওষুধের দোকানে ধর্মঘট পালিত হযেছে। তবে মহানগর এলাকায় থাকা ক্লিনিকগুলোর ভেতরের দোকানগুলো থেকে জরুরী প্রয়োজনের ওষুধ সংগ্রহ করা গেছে।
অন্যান্য : শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, নওগাঁ, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, যশোর, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজারসহ অন্যান্য জেলাতেও ওষুধের দোকানগুলোতে কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি’র ডাকে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট কর্মসূচি পলিক হয়েছে।
