এস.এম আজিজুল হক, পাবনা : ‘সেফটি ফাষ্ট এন্ড সেফটি লাষ্ট’ এই চিন্তা মাথায় রেখে সম্পুর্ন ঝুঁকিমুক্তভাবে দেশে এই প্রথম এবং বিশ্বের ২৯তম পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরের মধ্য দিয়ে রূপপুরসহ দেশবাসির দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার অবসান হলো। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা সে ধারাবাহিকতারই একটি মাইলফলক।
২ অক্টোবর বুধবার সকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ পাবনা জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনের পর রূপপুর আনবিক প্রকল্প মাঠে আমন্ত্রিত অতিথিদের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেন। এসময় তিনি রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনসহ দ্য স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটম) ডিজি সারগে ভি কিরিয়নেকো ও আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশন কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও রাশিয়া আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে যে মাইন পোতা ছিল তা নিরসন করা রাশিয়ার প্রচেষ্টা ছাড়া সহজ হতো না। আজও দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন এ ধরনের একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সাহায্য করছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার পর নানা দোলাচলে কেটে যায় ৫২ বছর। শুরুতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা দু’শ মেগাওয়াট ধরা হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ২ হাজার মেগাওয়াট করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ৫ বছরে ১ হাজার মেগাওয়াট ও পরবর্তী ১ বছরে আরও ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ১ টাকারও কমে। পরিকল্পনাধীন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যেই ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি নির্মাণ ব্যয়ের ৯০ ভাগ বহন করবে রাশিয়া সরকার আর ১০ ভাগ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ড. স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, রাশিয়ান ফেডারেশনের দ্য স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটম) ডিজি সারগে ভি কিরিয়নেকো ও আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশনের কর্মকর্তারা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে আরও যে গুলো উদ্বোধন করেন তার মধ্যে রয়েছে সরকারি এ্যাডওয়ার্ড কলেজের একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন হল, বেড়া বিবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা বিশিষ্ট ত্রিতল একাডেমিক ভবন, বেড়া আলিম মাদ্রাসা, চরগড়গড়ি দক্ষিণপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দারুল উলুম মারকাজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৪ তলা ভিত বিশিষ্ট একতলা একাডেমিক ভবন, ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস ভবন, ঈশ্বরদী উপজেলার কোমরপুর হতে লালপুরের গৌড়িপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প, ঈশ্বরদী মহিলা কলেজের ৪ তলা ভিত বিশিষ্ট দ্বিতল একাডেমিক ভবন, পাবনা জেলার শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন ষ্টেডিয়াম সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, বেড়া কলেজ, সাঁথিয়া কলেজ, জোড়গাছা কলেজ, শহিদ নুরুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজ, মাঝদিয়া ভবানীপুর কেজিবি কলেজ, নাজিম উদ্দিন আজগর আলী কলেজ, মোহাম্মদ ইয়াছিন আলী ডিগ্রী কলেজ, খিদিরপুর ডিগ্রী কলেজ, সাথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, টিনাবাড়ি বিলকোলমি দাখিল মাদ্রাসা, বড়দা নগর আব্বাসিয়া দাখিল মাদ্রাসা, আটঘরিয়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ৪ তলা ভিত বিশিষ্ট দ্বিতল একাডেমিক ভবন, বনওয়ারীনগর সিবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ৪ তলা ভিত বিশিষ্ট ত্রিতল একাডেমিক ভবনের ভিত্তি প্রস্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
